কঠিন বিপদের মধ্যেও প্রবল মানসিক শক্তি নিয়ে টিকে থাকেন অনেকে। শারীরিকভাবে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হলেও বুদ্ধিদীপ্ত কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে তারা স্থান করে নেন অনেক সুস্থ মানুষের ওপর। হাজারো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মেধা ও সৃজনশীল কাজে তারাই সবার অনুপ্রেরণার উৎস। এমনি ধৈর্যশক্তি ও অধ্যবসায়ের বাস্তব দৃষ্টান্ত হলেন নায়েফ বিন আইয়াদ আল-হারবি।
তিনি সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশের আল-রাস এলাকার বাসিন্দা। দুই দশক আগে দুর্ঘটনায় এ তরুণের পুরো শরীর একদম নিস্তেজ হয়ে পড়ে। কিন্তু দেহ নিষ্ক্রিয় হলেও তাঁর মেধা ও বুদ্ধিমত্তা খুবই সক্রিয়। দীর্ঘ এ সময় হাতের মাত্র একটি আঙুলের সাহায্যে ল্যাপটপে লিখেছেন পাঁচটি গ্রন্থ।
সৌদি সংবাদ মাধ্যম আল-আরাবিয়া সূত্রে জানা যায়, নতুন চিন্তা ও সৃজনশীল ভাবনার জন্য নায়েফ আল-হারবি সবার কাছে সুপ্রিয়। পুরো হাত নিষ্ক্রিয় হওয়ায় তিনি ল্যাপটপের কি-বোর্ড দিয়ে লিখতে পারেন না, বরং স্ক্রিনে আলাদা কি-বোর্ডে হাতের একটি আঙুলের সাহায্যে কাজ করেন তিনি। নিয়মিত কাজ করার পাশাপাশি নিজের আবেগ ও অনুভূতি লিখে প্রকাশ করেন তিনি। বর্তমানে তিনি স্থানীয় প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থা কুদরা অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কেয়ার অব পারসন উইথ ডিসেবেলিটিজের তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন।
তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রতিযোগিতার প্রগ্রাম প্রস্তুত করেন। তা ছাড়া ফটোশপ, পাওয়ারপয়েন্ট ও ওয়ার্ড ডিজাইনে তার রয়েছে অসাধারণ দক্ষতা। তার বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও অতিথিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একটি বড় ডিসপ্লে স্ক্রিন রয়েছে।
তাঁর লেখা গ্রন্থের মধ্যে ‘মিনাল আমাক ইলাল আফাক’ উল্লেখযোগ্য। সদ্য মারা যাওয়া স্ত্রীকে লিখেছেন ‘আইনা আল-মারদিয়্যাহ’। বাবা ও মায়ের উদ্দেশে লিখেছেন ‘ওয়া জান্না আন্নাহুল ফিরাক’। প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা বিষয়ে লিখেছেন ‘আল-মুসাবাকাত’। এ ছাড়া ‘কিতমানুল মিসক’ গ্রন্থে তিনি নিজের বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে লিখেছেন।
সূত্র : আল-আরাবিয়া
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: