মারা গেলেন আলবেনিয়ার প্রখ্যাত উপন্যাসিক ইসমাইল কাদারে

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২ জুলাই ২০২৪ ০২:৫৪

আলবেনীয় ঔপন্যাসিক ইসমাইল কাদারে : সংগৃহীত ছবি আলবেনীয় ঔপন্যাসিক ইসমাইল কাদারে : সংগৃহীত ছবি

প্রখ্যাত আলবেনীয় ঔপন্যাসিক ইসমাইল কাদারে আর নেই। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ জুলাই সোমবার আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বিশ্বনন্দিত এই লেখক। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে আজ সকালে ইসমাইল কাদারেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর জীবনপ্রদীপ নিভে গিয়েছিল। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইসমাইল কাদারের জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৮ জানুয়ারি আলবেনিয়ার গিজিরোকাসটারে। পড়াশোনা করেছেন তিরানা বিশ্ববিদ্যালয় ও মস্কোর গোর্কি ইনস্টিটিউট অব ওয়ার্ল্ড লিটারেচারে। মস্কো থেকে পড়াশোনা শেষে দেশে ফেরার পর প্রথমে সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ম্যান বুকার পুরস্কারজয়ী ইসমাইল কাদারের নাম নোবেল পুরস্কারের তালিকায় এসেছে অনেকবার।

আলবেনিয়ার স্বৈরশাসক এনভার হোক্সার একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন ইসমাইল কাদারে। ব্রোকেন এপ্রিল ও দ্য জেনারেল অব দ্য ডেড আর্মির মতো উপন্যাসে রূপক ও বিদ্রূপকে আশ্রয় করে একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি।

একনায়কদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় আলবেনিয়ার তৎকালীন কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ইসমাইল কাদারেকে দেশদ্রোহী তকমা দিয়েছিল। গত শতকের নব্বই দশকের শুরুতে আলবেনিয়া ছেড়ে ফ্রান্সে চলে পাড়ি জমান কাদারে। এক যুগ পর ২০০২ সালে আবার দেশে ফেরেন।

গত অক্টোবরে এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাদারে বলেছিলেন, ‘সাহিত্য হলো এমন এক শক্তি, যা আপনাকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে ও একনায়কের বিরুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করবে। আর এ কারণেই আমি সাহিত্যের প্রতি এত কৃতজ্ঞ। কারণ, এর মধ্য দিয়েই অসম্ভব বলে যা প্রতীয়মান হয়, তা-ও জয় করা সম্ভব।’

আলবেনিয়া এবং আন্তর্জাতিক সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ইসমাইল কাদারে। ১৯৬৩ সালে লেখা ‘দ্য জেনারেল অব দ্য ডেড আর্মি’ উপন্যাসের মাধ্যমে তিনি বিশ্বব্যাপী সাহিত্য সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছিলেন।

কাদারে ২০০৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল বুকার প্রাইজ, ২০০৯ সালে প্রিন্স অব আস্তুরিয়াস প্রাইজ এবং ২০১৫ সালে জেরুজালেম প্রাইজ পান। এছাড়া ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক লেখালেখিতে আজীবন অবদানের জন্য তিনি আমেরিকা অ্যাওয়ার্ড পান।

তিনি কবিতা, প্রবন্ধ এবং চিত্রনাট্যও লিখেছেন। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য ১৫ বার মনোনীত হন। একবার তিনি বলেছিলেন, 'খবরের কাগজগুলো সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ী হিসাবে আমাকে ইঙ্গিত করছে। এর মানে হচ্ছে অনেকেই মনে করে যে আমি ইতোমধ্যেই এটি জিতেছি।'

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: