প্রখ্যাত সাহিত্যিক এস. ওয়াজেদ আলি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৩২

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক এস. ওয়াজেদ আলি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শণ্ঠীরামপুর মহকুমার বড় তাজপুর গ্রামে ১৮৯০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৫১ সালের ১০ জুন ৬০ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।

তার পিতার নাম শেখ বেলায়েত আলী। ১৮৯৫ সালে বড় তাজপুর গ্রামের পাঠশালায় ওয়াজেদ আলীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পরে তিনি শিলং মোখার হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯০৬ সালে স্বর্ণপদক লাভ করে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি আলীগড় কলেজ থেকে ১৯০৮ সালে আইএ এবং এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯১০ সালে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯১২ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যান এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুনরায় বিএ ডিগ্রি ও বার-অ্যাট-ল’ সম্পন্ন করেন। ১৯১৫ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনব্যবসার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯২৩ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সির ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন এবং ১৯৪৫ সালে ওই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

লেখক হিসেবে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও ভ্রমণকাহিনি রচনায় এস. ওয়াজেদ আলি বেশ খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন একজন উদার ও প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব। মননশীল চেতনা, ইতিহাস ও নীতিজ্ঞান এবং সত্য ও সুন্দরের মহিমায় তার সাহিত্যকর্ম সমৃদ্ধ। বাংলাদেশ জন্মের বহু আগেই ব্রিটিশ আমলে বাংলাভাষী মানুষকে নিয়ে জাতি গঠন করার স্বপ্ন দেখেন। তার স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তার বই ‘ভবিষ্যতের বাঙালি’-তে এমন স্বপ্নের প্রতিফলন দেখা যায়। তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এস. ওয়াজেদ আলি তার নিরলস সাহিত্য সাধনার ভেতর দিয়ে মুসলিম ঐতিহ্য ও গৌরবকে সাবলীল প্রবন্ধ ও গল্পের মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন। ১৯১৯ সালে তার প্রথম প্রবন্ধ ‘অতীতের বোঝা’ প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত ‘সবুজপত্র’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার সাহিত্যে উদার ও প্রগতিশীলতা এই দুই গুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সত্য ও সুন্দরের সাধনায় নীতিজ্ঞান ও প্রেমের শাশ্বত মহিমায় তার সাহিত্যকর্ম সমৃদ্ধ। এস. ওয়াজেদ আলির লেখায় মার্জিত রুচি ও পরিচ্ছন্ন রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে, প্রবন্ধ— জীবনের শিল্প (১৯৪১), প্রাচ্য ও প্রতীচ্য (১৯৪৩), ভবিষ্যতের বাঙালি (১৯৪৩), আকবরের রাষ্ট্র সাধনা (১৯৪৯), মুসলিম সংস্কৃতির আদর্শ। গল্প— গুলদাস্তা (১৯২৭), মাশুকের দরবার (১৯৩০), বাদশাহী গল্প (১৯৪৪), গল্পের মজলিশ (১৯৪৪)। উপন্যাস— গ্রানাডার শেষ বীর (১৯৪০)। ভ্রমণকাহিনি— পশ্চিম ভারত (১৯৪৮), মোটর যোগে রাঁচী সফর (১৯৪৯) প্রভৃতি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: