২২ বছরের অপেক্ষার অবসান

ফুটবলে ভারতের বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৩

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

অবশেষে ফুরালো অপেক্ষা, ভারত বধের মহাগল্প লিখলেন হামজা-সামিতরা। জাতীয় স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়েছেন তারা। ২২ বছরের খরা কাটিয়ে ভারতের বিপক্ষে প্রায় ভুলতে বসা জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মঙ্গলবার মাঠে নামে বাংলাদেশ। ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দু’ দল। যেখানে শেষ হাসি স্বাগতিকদের, ভারতকে হারিয়েছে ১-০ ব্যবধানে।

ভারতের বিপক্ষে ২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর কোনো জয় ছিল বাংলাদেশের। তবে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর সেই উপলক্ষ পায়, ঘরের মাঠে তৈরি ছিল মঞ্চ। যে মঞ্চে আর ভুল করেনি হাভিয়ের কাবরেরার দল।

শেষ দু’ ম্যাচে হংকং ও নেপালের বিপক্ষে খুব কাছে গিয়েও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে তুলে নেয় আরাধ্য জয়।

জয়টা কতখানি আকাঙ্ক্ষিত ছিল, তা ম্যাচ শেষে গ্যালারির বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আর খেলোয়াড়দের আবেগঘন চোখ দেখেই বুঝা যায়! যদিও বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে এই জয় কোনো কাজে আসবে না দলের।

অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকে বাংলাদেশের পোস্ট লক্ষ্যে একের পর এক আক্রমণ সাজাচ্ছিল ভারত। মিতুল মারমার সামনে থেকে বল যেন সরছিলই না। তবে ভারত পরিস্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

উল্টো এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামকে নাচিয়ে তোলেন শেখ মুরসালিন। যদিও আসল কারিগর রাকিব হোসেন। ১২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে দ্রুত গতিতে তিনজনকে কাটিয়ে ভারতের বক্সে ঢুকে যান রাকিব।

বাম দিক থেকে রাকিব যে ক্রসটি নেন তাতে দুর্দান্তভাবে সামলে নেন মোরসালিন। ভারতীয় গোলরক্ষক এগিয়ে এসেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বাংলাদেশের জার্সিতে সপ্তম গোলটি পেয়ে যান তিনি।

গোল পেলেও ম্যাচে তাল খুঁজে পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। এদিকে চোটে পড়ে ২৭ মিনিটেই উঠে যেতে বাধ্য হন তারিক কাজী। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেব শাকিল আহাদ তপু।

৩৪ মিনিটে সমতা ফেরানোর বড় সুযোগ পেয়ে যায় ভারত। তবে বাংলাদেশকে বাঁচান হামজা চৌধুরী। ভারতীয় একজনের ক্রস হেডে ক্লিয়ার করেন তিনি। তবে এর খানিকটা পরেই উত্তেজনা ছড়ায় ম্যাচে।

হঠাৎই তপু বর্মণের সাথে ভারতের বিক্রমের সংঘর্ষ হয়। ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে। এমনকি একটা সনয় হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়। এমতাবস্থায় রেফারি তপু ও বিক্রম, দুজনকেই হলুদ কার্ড দেখান।

এরপরে অবশ্য তেমন বলার মতো কিছু ঘটেনি। হামজা দূর পাল্লার এক শট নিলেও অল্পের জন্য গোল পোস্টের বাইরে দিয়ে তা চলে যায়। ১-০ তে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধেও ভারতের শুরুটা ছিল আক্রমণাত্মক। এর মাঝেই ৭৮ মিনিটে তপু বর্মণের পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া দুর্বল শট ফিরিয়ে দেন ভারতীয় গোলরক্ষক। ৮৩ মিনিটেও সুযোগ তৈরি হয়।

এবার বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভারতের এক ডিফেন্ডারের হাতের পেছনে বল লাগে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা পেনাল্টির দাবি করলেও কান দেননি রেফারি। এরপর আরো ছোট ছোট সুযোগ পায় বাংলাদেশ, তবে কাজে আসেনি।

এদিকে ভারত আর গোল করতে না পারায় আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশ জিতল পাঁচ ম্যাচ পর। আজকের আগে সর্বশেষ গত জুনে প্রীতি ম্যাচে ভুটানকে ২–০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: