জুলাই সনদ নিয়ে তিন দলের তিনরকম অবস্থান

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৩৪

ছবি : গ্রাফিক্স ছবি : গ্রাফিক্স

জুলাই সনদকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে ত্রিমুখী বিভাজন তৈরি হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে সংস্কার নিয়ে গড়ে ওঠা ঐক্যে যেন ফাটল ধরেছে।

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর বিএনপি, জামায়াত নিয়ে এনসিপি নেতাদের বক্তব্য রাজনীতির আগুনে আরও ঘি ঢেলেছে। সনদ নিয়ে এই দ্বন্দ্ব কেন?

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোটের মতো বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন রয়েছে।

যদিও এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াতের ভাষা ভিন্ন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, এরা নতুন দল, তাদের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা রয়েছে। তারা কী বললো, এটা আমরা মাইন্ড করি না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এদের অভিজ্ঞতা শূন্য। একটা ভুল হয়েছে, এদের মন্ত্রিসভায় নিয়ে। এরা মন্ত্রিসভায় যোগ না দিয়ে বাইরে থাকলে সমর্থন আরও বাড়তো। কিন্তু মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়ায় তাদের সম্পর্কে সবাই জেনে গেছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, আমরা একসাথে আছি, একসাথে থাকবো প্রত্যাশা রাখি। তবে এটা যদি কোনও মহলকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে হয় অথবা রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যে হয় কিংবা দেশের জন্য ক্ষতিকর কোনও পরিস্থিতি যদি ডেকে আনে এর দায়-দায়িত্ব তাদেরকে নিতে হবে।

এদিকে, জুলাই সনদে স্বাক্ষরের সময়সীমা শেষ হবে ৩১ অক্টোবর। এনসিপি বলছে, সনদের আইনিভিত্তিসহ তিনটি শর্ত পূরণ হলেই তারা স্বাক্ষর করবে।

আখতার হোসেন বললেন, ঐকমত্য কমিশন যদি তাদের এই মেয়াদ বৃদ্ধির সময়কালে আলোচনার জন্য আমাদেরকে ডাকে, সেই আলোচনায় আমরা অবশ্যই অংশগ্রহণ করবো। কিন্তু সেই আলোচনাগুলোর মধ্য দিয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেয়া, সেটা বাস্তবায়নে একটা সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি হওয়া— এই বিষয়গুলো যদি অপ্রত্যাশিতভাবে না হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদেরকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

এদিকে, বিএনপি ও জামায়াতকে নিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্টের পর তৈরি হয়েছে বিতর্ক। জামায়াতকে উদ্দেশ করে তিনি লিখেছিলেন, পিআর আন্দোলন ছিল একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা।

আখতার হোসেন বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সময়টাতে যে আলোচনটার নিষ্পত্তির প্রয়োজন ছিল, যে আলোচনটা (নিম্নকক্ষে পিআরের আলোচনাটা) এখনকার জন্য বাস্তবসম্মত নয়, সেটাকেই যখন প্রধান এজেন্ডা আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটার মধ্য দিয়ে আসলে সংস্কারের যে সামগ্রিক আলোচনা, সেটা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে— তিনি তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তা ব্যক্ত করেছেন।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, উচ্চকক্ষে উনারা-ও তো পিআরের দাবি করেছে। যারা আজকে বলে পিআর দলীয় এজেন্ডা, তাহলে উনারা পিআরের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে কি না এটা স্পষ্ট করুক। আমরা এটা অপকৌশল হিসেবে করিনি। আমরা সিনসিয়ারলি করেছি। যাতে পিআর পদ্ধতি হলে দেশে সুষ্ঠ নির্বাচন হয়।

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, নতুন দল আস্তে আস্তে ভালো হবে। তারা কী বলেছে তা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না, জনগণও ভাবে না। জামায়াতের বিষয়ে যা বলেছে তা সঠিক।

তারপরও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সেটার জন্য সব দল ছাড়ের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে আশা নেতাদের।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: