কঠিন শর্তে বিদেশি ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:২৬

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

সাতটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে কঠিন শর্তে প্রায় ১০৬ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ নিচ্ছে সরকার। বুধবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিদেশি সহায়তা অনুসন্ধান কমিটির সভায় এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত হয়।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ অন্য কর্মকর্তারা।

বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার পক্ষ থেকে বৈদেশিক সহায়তার জন্য মোট ৩৬টি বিদেশি ঋণনির্ভর প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। তবে মাত্র সাতটি প্রকল্প কঠিন শর্তের ঋণের প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে।

কঠিন ঋণের সুদের হার হয় বাজারভিত্তিক, যা নমনীয় ঋণের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া এসব ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ও রেয়াতকালও তুলনামূলক কম।

এদিকে, গুরুত্বপূর্ণ অনেক আমদানি এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোর মতো প্রকল্পে সাধারণত নমনীয় সুদে ঋণ পাওয়া যায় না। তখন এ ধরনের ঋণ নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প থাকে না।

সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ নন-কনসেশনাল (কঠিন শর্তের) ঋণ থেকে এসেছে। বিশ্বব্যাংক বা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মতো সংস্থা থেকে সহজ শর্তের ঋণ কমে যাওয়ায় অনমনীয় ঋণে ঝুঁকতে হচ্ছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, রাজধানীর পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ মোট সাত প্রকল্পে অনুমোদিত ঋণ নেওয়া হবে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচটি জলবায়ু সহনশীল সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ঋণ দেবে ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)।

ঢাকা ওয়াসার দুটি প্রকল্পের মধ্যে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেইজ-৩) প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ প্রকল্পটিতে ১১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা ঋণ দেবে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (ইআইবি)। ৮ কোটি ইউরোর পুরোটাই অননমীয় ঋণ।

ওয়াসার আরেক প্রকল্প ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। এ প্রকল্পেও একই সংস্থা ইআইবি ঋণ দেবে ৬৭৪ কোটি। ৮ কোটি ইউরোর পুরোটাই নন-কনসেশনাল বা কঠিন শর্তের ঋণ। ডলারের অঙ্কে এ প্রকল্পে ঋণ ৯ কোটি ডলার।

চট্টগ্রাম-দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এডিবি। খুলনায় পানি সরবরাহের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ১ হাজার ৮২১ কোটি টাকা ঋণ দেবে একই সংস্থা এডিবি। সর্বশেষ উত্তরাঞ্চল তথা নেসকো এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য প্রকল্প ব্যয় হবে ১ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে ৯৬৫ কোটি টাকা এডিবির ঋণ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: