
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সোমবার জান্তা সরকার ঘোষণা করেছে, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত নির্বাচন আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে। দেশটির বেশিরভাগ অংশ তীব্র গৃহযুদ্ধের কারণে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই নির্বাচনকে একটি ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছেন।
২০২১ সালে সামরিক বাহিনী সে সময়কার গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমারে সংঘাত চলছে। এই অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির অনেক অংশই সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অসংখ্য গণতন্ত্রপন্থি গেরিলা ও শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের নিজেদের অঞ্চলে এই নির্বাচন আটকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং যেকোনো ভাবে নতুন সরকারের ওপর তার ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৬৩ বছর বয়সী এক মিয়ানমার নাগরিক এ বিষয়ে বলেন, আমি মনে করি না এই নির্বাচন জনগণের জন্য কোনো তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এটা শুধু সামরিক স্বৈরশাসকদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ হাজার হাজার মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে, অর্ধেকেরও বেশি দেশবাসীকে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জান্তা সরকার অবশ্য এই নির্বাচনকে সংঘাত অবসানের উপায় হিসেবে প্রচার করছে। তারা ভোটের আগে অস্ত্র জমা দিতে ইচ্ছুক বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নগদ পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে।
মান্দালয়ের একজন বাস্তুচ্যুত নারী বলেন, আমরা দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে চাই। নির্বাচনের কারণে যদি দেশটি আরও স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ হয়, তাহলে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই।
সু চি এখনো কারাগারে রয়েছেন ও ক্ষমতাচ্যুত অনেক বিরোধী আইনপ্রণেতা এই নির্বাচন বয়কট করছেন। জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে চলমান সামরিক শাসনের ওপর একটি ‘গণতান্ত্রিক আবরণ’ দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ‘প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: