বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সার্ভার প্রায় চার দিন হ্যাকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর রোববার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান। তবে কোনো ডকুমেন্ট খোয়া যায়নি বলে দাবি করেন তিনি।
২৫ জুন, রোববার রাতে শওকত আলী খান বলেন, কিছু হ্যাকার ব্যাংকের সার্ভার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। কিন্তু কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। সব ডকুমেন্ট অক্ষত আছে। ইতোমধ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। হ্যাকিংয়ের ফলে সারা দেশে কাজের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ঠিক হয়ে যাচ্ছে।’
এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথেষ্ট সহায়তা করেছে বলে জানান তিনি। কারা হ্যাক করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে বোঝা যাবে কে কীভাবে এটি করল।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাক হয়নি, কৃষি ব্যাংকের সার্ভার ডাউন হওয়ার কথা শুনেছি। তবে এখন স্বাভাবিক হয়েছে। কোনো সমস্যা নেই।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কৃষি ব্যাংকের সার্ভার কাজ করছিল না। সারা দেশের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারদের এক অভ্যন্তরীণ বার্তায় জানানো হয়, হঠাৎ সার্ভার ডাউন হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। শিগগিরই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সারাদিন অপেক্ষা করেও সার্ভার কাজ না করায় সেবা পাননি গ্রাহকরা।
নাম প্রকাশ না করে কৃষি ব্যাংকের একজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে সার্ভার কাজ করছে না। আমাদের জানানো হয়েছে, শিগগিরই ঠিক হবে। কিন্তু রোববারও পুরোপুরি ঠিক হয়নি। একটি সার্ভার দিয়ে সব কাজ কোনোমতে চালিয়ে নিচ্ছি।’
ব্যাংকের অন্য একটি সূত্র বলছে, হ্যাকারদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতেই সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হচ্ছে। হ্যাকার গ্রুপ একযোগে ফেরত না দিয়ে ধীরে ধীরে দিচ্ছে। বিষয়টি তাদের দাবি করা অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালে কৃষি ব্যাংকের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর ‘আইয়েলদাজ টার্কিশ সাইবার আর্মি’ নামে একটি গ্রুপ ওয়েবসাইটটি হ্যাক করে। তখন ব্যাংককে সতর্ক করে একটি বার্তা দিয়েছিল হ্যাকাররা। ওই বার্তায় বলা হয়, ‘সাইট নিরাপত্তা দুর্বলতা বন্ধ করুন, অন্যথায় দূষিত হ্যাকাররা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে।’ পিডিএফ ফাইলে বার্তাটি বসিয়ে দিয়ে তার নিচে তুরস্কের একটি পতাকাও দিয়েছিল হ্যাকাররা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: