৩৫% শুল্ক নির্ধারণ করে বাংলাদেশকে চিঠি দিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৮ জুলাই ২০২৫ ২১:৪৮

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

৩ মাস ধরে আলোচনার পর বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

গত ৩ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। সে সময় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। এর আগে দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল।

গতকাল বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্কহার নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হতে চলায় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। এর আগে ৯ জুলাই থেকে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ ছাড়া মিয়ানমার ও লাওসের পণ্যের ওপর ৪০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ৩০ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ, তিউনিসিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ, বসনিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ, সার্বিয়ার ওপর ৩৫ শতাংশ, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের ওপর ৩৬ শতাংশ এবং কাজাখস্তানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে।

চূড়ান্ত শুল্কের পরিমাণ উল্লেখ করে ১৪টি দেশের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। এসব চিঠি ট্রুথ সোশ্যালে প্রকাশ করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, সামনে আরও কিছু দেশের উদ্দেশে শুল্কবিষয়ক চিঠি পাঠানো হতে পারে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, ‘২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সব বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসবে। এটি খাতভিত্তিক শুল্কের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগ হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে যদি কোনো পণ্য ঘুরপথে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়, তাহলে সেই পণ্যের ওপরও উচ্চ শুল্কই আরোপ করা হবে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘দয়া করে বুঝুন, ৩৫ শতাংশ শুল্ক আমাদের দেশের সঙ্গে আপনার দেশের যে বড় বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে, তা দূর করার জন্য যথেষ্ট নয়- এই হার আসলে তার চেয়ে অনেক কম। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যদি বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের কোনো কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়ে পণ্য উৎপাদন করে, তাহলে সেই পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক থাকবে না। বরং আমরা দ্রুত, পেশাদারভাবে এবং নিয়ম মেনে সব অনুমোদন দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব- অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’

এদিকে শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ইতিপূর্বে বাণিজ্য উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, বুধবার মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দফায় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠক থেকে শুল্ক নিয়ে ভালো ফল পাওয়ার আশা করছেন তিনি। বাংলাদেশের বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বৈঠকটিতে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: