প্রথমবারের মতো চুল্লি জ্বালিয়ে বয়লার সচলের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশের মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২৪ জুন, শনিবার সকাল ৮টায় মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির ধোঁয়া উঠতে শুরু করে। পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বয়লারের কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বয়লার সচলের সক্ষমতা হিসেবেই চুল্লি দিয়ে এ ধোঁয়া নির্গমণ। বেলা ১২টা পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ৪ ঘণ্টা জ্বলে এই চুল্লি।
আগামী অক্টোবরে পরিপূর্ণ উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এ পরীক্ষা শুরু হয়। আগামী দুমাস পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলবে। এরপরই শুরু হবে সীমিত আকারে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন।
এ বিষয়ে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ”আমরা শুধু বয়লার পরীক্ষা শুরু করেছি। আশা করছি, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণোদ্যমে উৎপাদনে যাব। অবশ্যই এর আগে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন চলবে।”
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে এরইমধ্যে ৫টি জাহাজে করে অন্তত ৩ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আনা হয়েছে। সবশেষ ২৩জুন, শুক্রবার সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আসা এমভি নাবিউস আম্বর জাহাজ থেকেও খালাস শুরু হয়েছে।
বর্তমানে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিজার্ভারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কয়লার মজুত গড়ে তোলা হয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল প্রথমবারের মতো মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে কয়লা নিয়ে জাহাজ ভেড়ে। এরপর গত দুই মাসে এই জেটিতে কয়লাবাহী ৫টি জাহাজ ভিড়েছে। অত্যাধুনিক সাকার এবং কনভেয়ার বেল্ট ব্যবহার করায় মাত্র ৩ থেকে ৪ দিনে জাহাজের কয়লা খালাস হয়ে চলে যাচ্ছে কেন্দ্রের রিজার্ভারে। আর ইন্দোনেশিয়া থেকেই আনা হচ্ছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় কয়লা।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এবং ধলঘাট ইউনিয়নের ১ হাজার ৪১৪ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। জাপানের সহযোগিতায় প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পকে ঘিরেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজও শুরু হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: