কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আগামী রবিবার থেকে পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ বাংলাদেশে এসেছে। এখন বন্দর থেকে কয়লা খালাস করে বিদ্যুৎকেন্দ্রে নেওয়া হবে। সে হিসাবে আগামী রবিবার থেকেই কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
আগামী রবিবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেছেন পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা। তবে প্রথম এক সপ্তাহ একটি ইউনিট চালানো হবে। ২ জুলাই থেকে দুটি ইউনিট উৎপাদনে যাবে। কয়লা আমদানি ব্যাহত হওয়ায় গত ২৫ মে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
৫ জুন বন্ধ হয় দ্বিতীয় ইউনিট। পূর্ণ ক্ষমতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট চালাতে ১১ থেকে ১২ হাজার টন কয়লা লাগে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে এক হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, যা দেশের গড় উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত ১৭টি জাহাজের এলসি খোলা হয়। এতে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার টন কয়লা আনা যাবে। নতুন করে আরও কয়লা আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিকানায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি লিমিটেড (এনডাব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমান ৫০ শতাংশ করে অংশীদারি রয়েছে। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা করে।
ডলার সংকটের কারণে আমদানি করা কয়লার প্রায় ৩৯৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার বকেয়া জমে যাওয়ায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইন্দোনেশিয়ার কম্পানি। ওই কম্পানিকে কয়লার দাম পরিশোধ করে সিএমসি।
চুক্তি অনুযায়ী সিএমসি কয়লা ক্রয়ের ছয় মাস পর বাংলাদেশ অর্থ পরিশোধ করতে পারে। তবে ছয় মাস পার হয়ে গেলেও ডলার সংকটে বকেয়া পরিশোধ করতে পারেনি পায়রা কর্তৃপক্ষ। বড় অঙ্কের বকেয়া হওয়ায় চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কয়লা ক্রয়ে নতুন করে এলসি খুলতে সিএমসিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ কারণে কয়লা আমদানিতে জটিলতায় পড়ে বিসিপিসিএল। বাংলাদেশ সরকার দ্রুততার সঙ্গে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধ করে পুনরায় কয়লা আমদানি শুরু করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: