
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি পাবে কি না, তা নির্ভর করছে ডলারের বিনিময় হার উন্মুক্ত করা—অর্থাৎ বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ওপর।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার আশা করছে বাংলাদেশ ঋণের কিস্তি পাবে। তবে শর্ত নিয়ে আলোচনা এখনও বাকি আছে।
বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ২.৩১ বিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যেই ছাড় করেছে সংস্থাটি, আর ২.৩৯ বিলিয়ন ডলার এখনও বাকি আছে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য আহসান এইচ মনসুর, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং আরও ১০ জন এখন ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছেন।
২১ এপ্রিল শুরু হওয়া সভাটি আগামীকাল (২৬ এপ্রিল) শেষ হবে।
তবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সভার সাইডলাইনে আইএমএফ কর্মকর্তাদের পৃথক বৈঠক করেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল।
এই বৈঠক সম্পর্কে আহসান এইচ মনসুর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমাদের কিছু অগ্রগতি হয়েছে, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে। আশা করছি, কাল-পরশুর মধ্যে একটা ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে। এখন কারিগরি দিকগুলো নিয়ে কাজ চলছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, 'বিষয় তো একটাই—মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা। আইএমএফ এই ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থানে আছে। প্রশ্নটা হচ্ছে সময়ের। এটা কি (কিস্তি ছাড়ের) আগে করব, না পরে।'
ওয়াশিংটন ডিসিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মর্তুজা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে গভর্নর বলেন, 'বাজার বর্তমানে খুব স্থিতিশীল আছে। আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটে পর্যাপ্ত ডলারের সরবরাহ আছে। আমদানির ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, ঈদের বাজারে রোজার সময় ব্যাপক আমদানি হয়েছে। কোনো শর্টেজ কোথাও হয়নি এবং এখনও সেটা নাই।'
রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর, ডিসেম্বর ও চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত আইএমএফের দেওয়া রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে বাংলাদেশ।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের সঙ্গে দ্বিমত করার কিছু নেই। তবে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশ হবে বলে আইএমএফ যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তার সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন তিনি। তিনি আশা করেন, প্রবৃদ্ধির হার আরেকটু বেশি হবে।
ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি পর্যালোচনা করার জন্য আইএমএফের একটি মিশন দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফর করে গেছে।
সফর শেষে আইএমএফ কর্মকর্তারা ১৭ এপ্রিল বলেছিলেন, আরও আলোচনা হবে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জুনের শেষ নাগাদ ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি ছাড় করা হতে পারে।
বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসিতে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের ঋণ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সেই বছরের ফেব্রুয়ারি ও ডিসেম্বরে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি এবং ২০২৪ সালের জুনে ঋণের তৃতীয় কিস্তির ঋণ পায় বাংলাদেশ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: