
নতুন স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের মূলধন সহায়তার জন্য ৮০০-৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সোমবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত ‘ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একটি পর্বে এই তহবিল গঠনের খবর দেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
গভর্নর বলেন, শুধুমাত্র নতুন উদ্যোক্তাদের মূলধন সহায়তার জন্য ৮০০-৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। এটা বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। শিগগিরই এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হবে। বাংলাদেশ শুধু বাণিজ্যের জন্য নয় বিনিয়োগের জন্যও উপযুক্ত গন্তব্য বলেও এ সময় মন্তব্য করেন গভর্নর। তিনি বলেন, ৯৫ শতাংশ স্টার্টআপই ব্যর্থ হয়। সফল হয় না। তারপরও আমরা স্টার্টআপদের সহযোগিতা করছি। একদিন সফলতা আসবেই।
এ সময় বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স পাওয়াসহ সরকারি লালফিতার দৌরাত্ম্য বেশি। প্রতিবছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। তিনি বলেন, ৪০ দেশের ৫ শতাধিক বিদেশি বিনিয়োগকারী এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এসব বিনিয়োগকারীকে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখানো হবে। বাংলাদেশে উদ্ভাবনী উদ্যোক্তার অভাব নেই বলে মন্তব্য করেন বিডার চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, স্টার্টআপ তহবিলের সংকটে নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসা শুরু করতে পারেন না। এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, এ সরকার কখনো ইন্টারনেট বন্ধ করবে না। এটিকে সরকার নাগরিক অধিকার মনে করছে।
বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথমদিনে অভূতপূর্ব সাড়া: চারদিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ এর প্রথমদিনে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি জানান, বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনে ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ কানেক্ট- ২০২৫’ নামের অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে দেড় হাজারের বেশি নতুন উদ্যোক্তা অংশ নেন। এতে ৭০ জন বিশেষজ্ঞ অংশ নেন।
ভবিষ্যতে ইন্টারনেট বন্ধ হবে না বা ইন্টারনেটের দাম কমানোর উদ্যোগ আছে কি না, অনুষ্ঠানে এই প্রশ্ন রাখা হয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইয়্যেজ তৈয়্যবকে। তিনি বলেন, আমরা ইন্টারনেটের দাম গেটওয়ে লেভেল থেকে কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছি। আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সুশাসন নিশ্চিতে কাজ করছে, সেটি সবার আগে আইসিটিতে নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে সরকারের ইন্টারনেট বন্ধ করার সুযোগ আছে কি না- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করবে না- এটা নিশ্চিত। ভবিষ্যতের কোনো সরকারও তা বন্ধ করতে পারবে না। এসওপি আর এনজিএসও এমনভাবে সাজানো হয়েছে, তাতে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো পলিসি রাখা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বাড়বে, কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, প্যানিক হওয়ার কিছু নেই। আমরা বারবার বলছি যে, আমরা এমন কিছু পদক্ষেপ নেবো যাতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে, কমবে না। শফিকুল আলম বলেন, ৬ই এপ্রিল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভালো সভা হয়।
সেখানে বিজিএমই’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ অন্যদের মধ্যে তপন চৌধুরী, নাসিম মঞ্জুর, লুবানা হক উপস্থিত ছিলেন। তাদের আশ্বস্ত করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তাতে রপ্তানি বরং বাড়বে, কমবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দেয়া চিঠি একটি বড় মেসেজ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে বার্তা দেন লিঙ্কডইনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্যানেল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এবং আইসিটি সচিব শীস হায়দার চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন- সফল স্টার্টআপ শেয়ার ট্রিপের সিইও সাদিয়া হক।
এর আগে সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বিডার আয়োজনে ৪ দিনব্যাপী এই বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হয়। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য- ‘এম্পাওয়ারিং ইনোভেশন কানেকটিং অপরচুনিটি’।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: