
যেকোনো পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শনিবার সকালে রাজধানীতে নতুন জাতিসংঘ কমন প্রাঙ্গণ পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সেখানে ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেখেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করেন।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের সরকার ও মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের ভালোবাসা আর আতিথেয়তার জন্য। এমন অনেক কম দেশই আছে, যেখানে জাতিসংঘ এত বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ, আতিথেয়তা ও সমর্থনের মধ্যে কাজ করে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমি অবশ্যই উল্লেখ করতে চাই বিশাল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি আপনাদের আতিথেয়তার বিষয়টি, যা আমি গতকাল দেখে এসেছি। অন্য দেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও সেখানকার স্থানীয়রা তাদের জমি, বন, পানি এবং সব কিছুই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছে, যা দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা নিজ দেশে পাচ্ছে না।
তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, এই কঠিন সময়েও বাংলাদেশে বেশ সতেজ লাগছে, কারণ এটা এমন উদার এক দেশ যেখানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত, যা আমরা বিশ্বের যেকোনো দেশে দেখতে চাই।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহাসচিব বলেন, এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশ পাশে দাঁড়াতে যা কিছু করা প্রয়োজন, তার সব কিছুই করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা ও সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণে আমরা কাজ করব।
বাংলাদেশকে জাতিসংঘের অন্যতম পরীক্ষিত অংশীদার এবং শান্তিরক্ষায় সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা অন্যতম দেশ বলে উল্লেখ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, আজ বিশ্বের অন্যতম মৌলিক চাহিদা হলো জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। অনেক দিক থেকেই বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের যুদ্ধে আমরা হয়তো জিতব না, তাই আমাদের মানুষ, প্রকৃতি ও দেশকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। আমি বলতে চাই, এ দিক থেকে বাংলাদেশের সুস্পষ্ট নীতি রয়েছে এবং অন্য দেশের তুলনায় অনেকাংশেই এগিয়ে রয়েছে।
সকালে নতুন জাতিসংঘ কমন প্রাঙ্গণ পরিদর্শনের আগে তিনি জাতিসংঘ কান্ট্রি টিম (ইউএনসিটি) বাংলাদেশের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেন।
চারদিনের সফরের তৃতীয় দিনে আজ তিনি আরো কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এর মধ্যে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে ২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। দুপুর ২টা ১৫ মিনিট থেকে বিকাল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই তরুণদের সঙ্গে সংলাপ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেবেন।
এরপর বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: