দেশের রাজনীতিতে ইসলামপন্থী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকলেও নতুন পরিস্থিতিতে দূরত্ব ঘোচার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার বরিশালে এসে দুপুরে চরমোনাই পীরের দরবারে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। পরে তিনি চরমোনাই পীরের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
ইসলামী যুব আন্দোলনের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি এইচ এম সানাউল্লাহ বলেন, রাজনীতিতে দুই দল এত দিন পরস্পরবিরোধী থাকলেও এখন অনেক বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করছে। এটা দুই দলের ঐক্যের সূচনা পর্ব বলতে পারেন। এরই ধারাবাহিকতায় এই প্রথম জামায়াতের কোনো আমির চরমোনাই পীরের দরবারে এলেন এবং দলীয় প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিলেন।
জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে আজ সকালে বরিশাল আসেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। বিকেলে কর্মী সম্মেলনে যোগদানের আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বরিশাল সদরে চরমোনাই পীরের দরবারে যান। সেখানে তিনি মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তাঁরা রাজনৈতিক নানা বিষয়ে কথা বলেন। পরে দুই দলের নেতা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
ইসলামী দলগুলোর ঐক্য বা জোট হচ্ছে কি না, প্রশ্নের জবাবে দুই দলের আমির ঐক্যের জন্য জনসাধারণের কাছে দোয়া চান। তাঁরা বলেন, ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা মূলত ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দেখতে চাই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেব না। তাই যথাযথ সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে শতকরা ৯১ জন নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বাকি ৯ ভাগের মধ্যে কিছু ভিন্ন ধর্মাবলম্বী। সব মিলিয়ে, এই বাংলাদেশ আমাদের। আমাদের মিলনমেলা আল্লাহর জন্য। এই মিলন রাজনীতির মাঠেও থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। জনগণের প্রত্যাশা, নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইসলামি দলগুলোর যেন একটি বাক্স থাকে।’
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ইসলামের পক্ষে একটি বাক্স কেন্দ্রে পাঠানোর প্রচেষ্টা আগেও ছিল, এখনো চলছে। বিভিন্ন কৌশলে গত ৫৩ বছর ইসলামি দলগুলোকে দূরে রাখা হয়েছে। ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতার মাধ্যমে ইসলামি পক্ষের জন্য একটি ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। তবে যদি আমরা সময়োপযোগী বিচার না করি, তা আমাদের জন্য অকল্যাণকর হতে পারে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: