ভারত থেকে সকল অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় রোববার (২৯ ডিসেম্বর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই আইনি নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রককে বিবাদী করা হয়েছে।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিশ্বের সকল দেশ ‘তুলনামূলক সুবিধা’ নীতি অনুসরণ করে থাকে। ‘তুলনামূলক সুবিধা‘ বলতে এমন একটি অর্থনৈতিক নীতি বোঝায়, যেখানে একটি দেশ সেই সকল পণ্য বা সেবা আমদানি করে, যেগুলো দেশীয়ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হলেও তা তুলনামূলকভাবে বেশি সুযোগ ব্যয়ে উৎপাদিত হয়। এই নীতির মাধ্যমে দেশটি নিজের সম্পদ ও দক্ষতা সেসব খাতে কেন্দ্রীভূত করে, যেখানে তার তুলনামূলক সুবিধা রয়েছে। ফলে দেশটি কম খরচে উচ্চ মানসম্পন্ন পণ্য আমদানি করতে পারে এবং বাণিজ্যের মাধ্যমে আর্থিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটায়।
আরও বলা হয়, দুঃখের বিষয় ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আমদানির নীতি ‘তুলনামূলক সুবিধা‘ অনুসরণ করা হচ্ছে না। বাংলাদেশ ভারত থেকে কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির পাশাপাশি ব্যাপক পরিমাণ অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে থাকে। এই অপ্রয়োজনীয় পণ্য বলতে সেই পণ্যগুলো বোঝায় যেগুলো আমদানির কোন প্রয়োজন নেই এবং দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো এসব পণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
নোটিশে এই আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশের যেসকল আমদানিকারকরা ভারতীয় পণ্য আমদানি করেন তাদের অধিকাংশই প্রকৃত আমদানিকারক নন। তারা মূলত ভারতীয় রফতানিকারকদের দালাল। এই দালাল আমদানিকারকরা ভারতীয় রফতানিকারকদের নির্দেশনামতো কম দামে ভারত থেকে মালামাল আমদানি করে সেগুলো বাংলাদেশে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে। এছাড়া সেসব পণ্যের মূল্য হুন্ডি করে ভারতের রফতানিকারকদের কাছে পাঠায় বিনিময়ে তারা কমিশন পায়। এর মধ্যে দেশের মুদ্রাও পাচার হয়।
আইনি নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করতে এবং যে সমস্ত বাংলাদেশি দালাল আমদানিকারকরা ভারত থেকে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করেন এবং হুন্ডি বা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠান, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: