বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল বদলে যাচ্ছে। আর এই বিষয়টি সুফল বয়ে এনেছে ভারতের জন্য। দেশটির তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর থেকে পোশাক রপ্তানির অর্ডার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভারত সরকার প্রকাশিত বাণিজ্য পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অক্টোবর মাসে পোশাক রপ্তানি ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। টেক্সটাইল রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
ভারতীয় টেক্সটাইল শিল্প কনফেডারেশনের চেয়ারম্যান রাকেশ মেহরা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, এই অগ্রগতির পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের পোশাক ও টেক্সটাইল রপ্তানির শেয়ার বৃদ্ধি, সরকারের সহযোগিতামূলক উদ্যোগ এবং ভারতের পছন্দের সরবরাহ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা অন্যতম।
অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (এইপিসি) চেয়ারম্যান সুধীর শেঠি বলেন, ‘বৈশ্বিক অস্থিরতা ও চলমান যুদ্ধের প্রভাবের পরও ভারতীয় তৈরি পোশাক রপ্তানি রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এটি প্রমাণ করে যে কঠিন সময়েও এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম। গুণগত মান ও টেকসই উৎপাদনে জোর দেওয়ার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি।’
সুধীর শেঠি আরও বলেন, ‘কিছু মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিভুক্ত (এফটিএ) বাজার যেমন দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মরিশাসেও আমরা ভালো করছি।’ তিনি বলেন, ‘আগামী বছর আমরা আয়োজন করছি ভারতের সবচেয়ে বড় টেক্সটাইল মেলা ভারত টেক্স-২০২৫। এটি আমাদের সম্ভাবনা তুলে ধরার একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম হবে। বৈশ্বিক ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো ভারত থেকে সরবরাহ নিতে মুখিয়ে আছে। আমরা তাদের আমন্ত্রণ জানাতে রোড শো ও গোলটেবিল বৈঠক করছি। তাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।’
এইপিসির মহাসচিব মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘বাংলাদেশের সংকটের কারণে সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্গঠিত হচ্ছে। বৈশ্বিক ক্রেতারা এখন চীনের বিকল্প খুঁজছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চলমান যুদ্ধের কারণে প্রচলিত বাণিজ্য রুটগুলো বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়ে গেছে। এ সময়ে সরকার যদি এই শ্রমঘন খাতকে যথাযথ সহায়তা দেয়, তাহলে এ খাত আরও এগিয়ে যেতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজন হাতে-কলমে সহযোগিতা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন, বিনিয়োগ এবং টেকসই আর্থিক সহায়তা।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: