যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ৬ নভেম্বর, বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, বিবিসি, সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার ইউএসের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ইউএসএ’র যে সম্পর্ক সেটা আরও উচ্চ শিখরে যাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভালো সম্পর্ক আছে। আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আরও একটু ভিন্নমাত্রা এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় সারা বিশ্বের দেশগুলোতে গণতন্ত্রে থাকুক। বিশ্বের দেশগুলো গণতন্ত্র চর্চা করুক।
তিনি বলেন, ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) দেখছে যে আগের ১৫ বছর এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছিল। সেই জায়গা থেকে যে সরকার এসেছে তাদের কাজ হলো ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজেকশনে নেওয়া। সেই জন্য তারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
প্রেস সচিব বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিক পার্টির সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। তাদের টপ লিডারদের অনেকের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। আমরা আশা করি, তার যেই সম্পর্ক...বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক, সেটা আরও গভীরতর হবে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা টুইট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন। আগে যখন তিনি টুইট করেছেন তখন উনি ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যান্ডিডেট। আমরা মনে করি উনাকে (ডোনাল্ড ট্রাম্প) মিস ইনফরমেশন দেওয়া হয়েছে। এখন যেহেতু তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি দেখবেন ঘটনাটা কী হয়েছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস... বাংলাদেশে কী ঘটনা ঘটছে, তিনি এক্সচুয়াল চিত্রটা জানবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই সরকার কী চাচ্ছে? এরা তো ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনে কাজ করছে। ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনের ক্ষেত্রে আমরা মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্পও চাইবেন পুরো বিশ্বে ডেমোক্র্যাসি ছড়িয়ে পড়ুক। সেজন্য আমাদের সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
প্রেস সচিব বলেন, আমরা আশা করবো বাংলাদেশের যে মাইনরিটি গ্রুপ, তারা যখন রিপোর্ট করবেন, তাদের রিপোর্টগুলো নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনেক ক্যাম্পেইন হয়। আমরা আশা করবো তারা রেসপনসিবল রিপোর্ট করবেন। যেটা সত্য সেটাই ফুটে উঠুক।
তিনি বলেন, দুর্গাপূজার সময় অনেক কথা বলা হয়েছিল। শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। প্রত্যেকটা পূজামণ্ডপকে মনিটরিং করতে প্রথমবারের মতো আমার একটা অ্যাপ তৈরি করেছিলাম, যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না করতে পারে। আমাদের মাইনরিটি যারা আছেন, তারা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে তাদের উৎসবগুলো পালন করুক। আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই। দাঁড়াচ্ছি আমরা। দুই একটা আইসোলেটেড (বিচ্ছিন্ন) ঘটনা হয়েছে। কাল যে ইসকনের ঘটনাটা সেটা আপনারা চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন, তারাই আপনাদের জানাবে। আমরা দেখেছি কী হয়েছে।
শিক্ষা সংস্কারের ব্যাপারে তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে বড় একটা খাত হচ্ছে শিক্ষা। অবশ্যই শিক্ষা নিয়ে কাজ হবে। কখন এই কমিশন হবে সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষা সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের ভাবনা-চিন্তা আছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: