একদিকে তীব্র গরম, আর অন্যদিকে অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ে নাকাল দেশবাসী। পায়রার উৎপাদন বন্ধের পর সৃষ্ট এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এবার নতুন পরিকল্পনা সাজিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুুযায়ী সপ্তাহখানেকের মধ্যে আরও এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে। তবে নতুন এ বিদ্যুতের বড় অংশই আসবে আমদানি থেকে।
নতুন এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্যাস ও তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন আরও ৫০০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বাড়িয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটাতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ। সে ক্ষেত্রে রামপালের প্রথম ইউনিট পূর্ণক্ষমতায় চালু রেখে ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ। যেখান থেকে বর্তমানে মিলছে ৪০০ মেগাওয়াটেরও কম। এছাড়া প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বাড়িয়ে আদানি থেকে ১ হাজার ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি ও বাঁশখালীর কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের উৎপাদন আরও ২০০ মেগাওয়াট বাড়াতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ।
তবে মাসের শেষদিকে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পায়রার ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন উভয় ইউনিটই পুরোদমে চালুর আশা নীতিনির্ধারকদের।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘১৩ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত আমাদের নতুন কিছু ডেভেলপমেন্ট হবে। কয়লাভিত্তিক যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আছে, সেগুলোতে যেন কয়লার সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকে, সেটার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পায়রা আবার উৎপাদনে চলে আসবে। অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উন্নতিও বজায় থাকবে। তাই ২৩ তারিখ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, আশা করি।’
এদিকে, পরিকল্পনার বড় অংশই আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় পায়রার উদাহরণ টেনে জ্বালানি আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলার নিশ্চিতের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, ‘পায়রায় যে অভিজ্ঞতাটা পেলাম, ডলার সংকটে আমরা কয়লা আনতে ব্যর্থ হলাম। সুতরাং সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে ডলার এবং আমদানির সমন্বয় করতে হবে।’
সংকটের আপৎকালীন সমাধানে সরকারি কার্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যুতের অপচয় রোধ, জ্বালানির সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিতের তাগিদও দিলেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া নিজস্ব জ্বালানির উৎপাদন এবং নবায়নযোগ্য উৎস বাড়িয়ে তারা টেকসই সমাধানে ওপর জোর দিচ্ছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: