ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ বাংলাদেশের কো-স্পন্সর প্রস্তাব গ্রহণ করেছে

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৪৭

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১০ম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) দেওয়া মতামতকে সমর্থন করে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশসহ ৫৩টি দেশের যৌথ সহযোগিতায় ফিলিস্তিন এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।

১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার ভোটের মাধ্যমে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘের ১২৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ১৪টি দেশ বিপক্ষে এবং ৪৩টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। সহ-প্রস্তাবক হিসেবে বাংলাদেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত সাধারণ পরিষদের বিতর্কে বাংলাদেশের বক্তব্য তুলে ধরেন।

মুহিত আইসিজের এই ঐতিহাসিক মতামতকে স্বাগত জানান এবং সকল সদস্য রাষ্ট্রকে এই মতামত মেনে চলার আহ্বান জানান।

তিনি গাজায় চলমান বর্বরতা এবং প্রাণহানির ঘটনায় বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৭২৮ নম্বর প্রস্তাবের সূত্র উল্লেখ করে তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

মুহিত জোর দিয়ে বলেন, ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানার ভিত্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।

স্থায়ী প্রতিনিধি দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে অবৈধ দখলদারিত্ব এবং গণহত্যার অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ায় আইসিজে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তিনি গাজার ভয়াবহ মানবিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘের মহাসচিব এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের বিবৃতিকেও স্বাগত জানান।

সাম্প্রতিক আইসিজের রায়ের আলোকে, প্রস্তাবে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনে তার অবৈধ উপস্থিতি শেষ করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা গাজায় তার সামরিক অভিযান বন্ধ করার প্রথম পদক্ষেপ।

এছাড়াও প্রস্তাবে দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি, ক্ষয়ক্ষতি বা আহতের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এছাড়াও, জাতিসংঘের মহাসচিবকে প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা সম্পর্কিত চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের আলোকে ইসরায়েলের করা গণহত্যার অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এই প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে, সাধারণ পরিষদ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উপায় খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এক বছরের মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বানের সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

সার্বিকভাবে, দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কট সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রস্তাবকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: