ঢাকা যাচ্ছেন লুসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৪

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

বাংলাদেশে সরকারের পতনের পর ঢাকায় প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। হাসিনার শেষ বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছিল। এমন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও অন্যান্য খাতে সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে, সে বিষয়ে জানার আগ্রহ সবার।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুসহ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি আজ শনিবার ঢাকায় যাচ্ছে। কূটনীতিকেরা মনে করছেন, হাসিনা সরকারের আকস্মিক পতনকে প্রতিবেশী ভারত নিজেদের জন্য একটি কৌশলগত পরাজয় মনে করছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে বাংলাদেশ পরিস্থিতি তুলে ধরে সহযোগিতা চেয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটেই ডোনাল্ড লু দিল্লি হয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। সার্বিক বিচারে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের এই প্রতিনিধিদলের এবারের ঢাকা সফরে নানামুখী তাৎপর্য আছে।

গণ-আন্দোলন তুঙ্গে ওঠায় শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তাঁর সেখানে অবস্থান এবং রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারে একধরনের অস্বস্তি আছে।

থিংকট্যাংক বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির গতকাল শুক্রবার বলেন, কূটনৈতিক দৃশ্যমানতা, দেশের অর্থনৈতিক চাহিদা ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটির সফর সময়োপযোগী ও অর্থবহ হওয়ার সুযোগ আছে।

যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী সাবেক এ কূটনীতিক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে চলছে; সংস্কার, জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন
বিষয়ে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সঠিক ধারণা দেওয়া দরকার।

প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা থাকছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

দেশের চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের বিচারেও যুক্তরাষ্ট্রের দলটির সফর গুরুত্বপূর্ণ, এমন মন্তব্য করে হুমায়ূন কবির বলেন, ‘লু বাদে এই দলের অন্যরা আর্থিক ও অর্থনৈতিক খাতের প্রতিনিধি। কাজেই ব্যাংক খাতে সংস্কার, পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা, দুর্নীতি দূর করা, বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পাওয়া, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সহায়তা পাওয়া—এমন বহু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক, কারিগরি ও আর্থিক সমর্থন বাংলাদেশের দরকার হবে।’

এই সফর থেকে বাংলাদেশ কী আশা করছে, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দীন গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে এই সফরে বোঝা যায়, তারা এই সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। আর প্রতিনিধিদলের গঠন থেকে বোঝা যায়, তাদের সঙ্গে আলোচনা বহুমাত্রিক হবে।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: