বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটির সরকার। ৯, সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় উপদেষ্টা কানাডার হাইকমিশনারকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বাংলাদেশের অনেক বড় বড় অপরাধী বিপুল পরিমাণ অর্থ কানাডায় পাচার করে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
হাইকমিশনার এ বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তবে তিনি এ–ও বলেন, অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু অসম্ভব নয় বলে জানান হাইকমিশনার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণসহ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব ও চিঠি দেওয়ার অনুরোধ করেন হাইকমিশনার।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত সব বিদেশি নাগরিকের জন্য শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাঁরা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, কানাডাসহ বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, কৃষি খাতে সহযোগিতা, পাচার হওয়া অর্থ ফেরতসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা হাইকমিশনারকে স্বাগত জানান। কানাডা হাইকমিশনারসহ বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশিদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। আমরা তাঁদের জন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নতি ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব শিগগিরই আরও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছেন উপদেষ্টা।
সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে কানাডীয় হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করলে উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী মিয়ানমার নাগরিকসহ সেখানে কাজ করা দেশি–বিদেশি এনজিও কর্মী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমিত আর্থিক সামর্থ্যের মধ্যে থেকেও বাংলাদেশ অনেক বছর ধরে ১২ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর আশ্রয় ও সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এখন সময় এসেছে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর নিজ দেশে প্রত্যাবাসন ও অন্য দেশে পুনর্বাসন করা। উপদেষ্টা এ সময় কানাডাতে কিছু রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসনের অনুরোধ করেন।
পুলিশ সংস্কারে উপদেষ্টা কানাডার সহায়তা চাইলে হাইকমিশনার বলেন, পুলিশ প্রশিক্ষণে কানাডার সহযোগিতাবিষয়ক একটি প্রকল্প বাংলাদেশে চালু রয়েছে। এটিকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে এ বিষয়ে কানাডা আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। হাইকমিশনার বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তরে কানাডার অর্থায়নে ‘কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নে উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। উপদেষ্টা এ ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: