ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) চিকিৎসকদের মারধরকারীদের বিচারের আওতায় আনা ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি মানার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল শাটডাউনের ডাক দিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ। ১ সেপ্টেম্বর রোববার পৌনে ১টার দিকে এই ঘোষণ দেন তিনি।
চিকিৎসক আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিকিৎসকদের মারধরকারীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তার আগ পর্যন্ত সারা দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল শাটডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে।’ এ ছাড়া তাঁদের আটটি দাবি রয়েছে, সেগুলো দুপুর ২টায় দিকে ঘোষণা করা হবে জানান তিনি।
আব্দুল আহাদ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যে দুইবার ইনসিডেন্ট ঘটেছে, সেখানে আমাদের চিকিৎসকেরা নিজের জীবন বাজি রেখে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়েছে। এমনকি নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়েছে, খাবার দিয়েছে। আমরা বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটা পার্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে-নিউরো সার্জারি অপারেশন থিয়েটার থেকে রোগীর লোক এক ডাক্তারকে বের করে এনে মারধর করে। শুধু তাই নয়, মারতে মারতে ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরে পরিচালকের রুমে নিয়ে যায়। এ বিষয় নিয়ে আমরা দফায় দফায় বৈঠক করেছি। বৈঠকে দুটি বিষয় সিদ্ধান্ত হয়েছে—একটি অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। দ্বিতীয়টি-আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা। আমরা যারা জরুরি বিভাগে থাকি, তাদের নিরাপত্তার জন্য আর্মি, পুলিশসহ অন্যান্য ফোর্স এখানে থাকবে। কিন্তু আমাদের প্রশাসন সেটা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
চিকিৎসক আব্দুল আহাদ বলেন, ‘গতরাতে আরও দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। বাইরে এক গ্রুপ এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। সেই গ্রুপ চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেলে আসে। তখন বিপক্ষ গ্রুপ ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসা নিতে আসা গ্রুপকে আবার মারধর করে। তাহলে যেখানে রোগীও নিরাপদ না, সেখানে চিকিৎসকেরা কেমন করে নিরাপদ থাকবে। এর কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগের মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারে (ওসেক) এক যুবক মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার, নার্সদের ওপর হামলা করে। ইমার্জেন্সি ভাঙচুর করে। আমরা দেখতে পাই, চিকিৎসক রোগী কেউ নিরাপদ না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিচালকের অনুরোধে রাত ১১টার পরে কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাই। সারা রাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। কিন্তু কোনো সিকিউরিটি আমরা দেখতে পাইনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য কর্মবিরতিতে যাচ্ছি। সারা বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সকল হাসপাতাল বন্ধ থাকবে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: