ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রাথমিক চুক্তি পুনর্বিবেচনার পরিকল্পনা সামিটের

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২১ আগস্ট ২০২৪ ১৮:৫৬

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

ভারতের বিদ্যুৎ রফতানি নীতিমালা পরিবর্তনের পর প্রতিবেশী দেশ থেকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ আমদানির প্রাথমিক চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ। তবে বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ আগের মতোই অব্যাহত থাকবে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সামিটের চেয়ারম্যান আজিজ খান এ তথ্য জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ভুটান ও নেপালের জলবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ভারত হয়ে ৭০০ মেগাওয়াট যে বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছিল তা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

কারণ সে বিদ্যুৎ ভারতের ভূমি ব্যবহার করেই বাংলাদেশে আনার কথা ছিল। নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে ভারতের ভূমি অন্য কোনও দেশ ব্যবহার করতে পারবে না। ফলে বিদ্যুৎ আনাও অনিশ্চিত হয়ে পড়লো৷

জানা যায়, ভারত সম্প্রতি বিদ্যুৎ রফতানি নীতিমালা সংশোধন করেছে। বাংলাদেশে আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারত চলে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে এই নীতিমালা কার্যকর করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ভারতের ভেতরে বিদ্যুৎ দিতে পারবে। কিন্তু সংশোধনের আগ পর্যন্ত আদানি জানিয়েছিল বাংলাদেশে তারা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখবে৷

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির জন্যই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

আজিজ খান রয়টার্সকে বলেন, নীতিমালা পরিবর্তনের পর আমার ভারতীয় অংশীদাররা হয়তো ভারতের বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রিতে আগ্রহী হবে। আমাদের কোম্পানি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করবে এবং আমাদের আরও ঝুঁকি নিতে হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে সামিটের একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে৷ জানা যায়, গত বছর ভারতের টাটা পাওয়ার রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডসহ বেশ কিছু ভারতীয় অংশীদারের সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তি করেছিল সামিট। চুক্তির আওতায় এক হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প নির্মাণ এবং সরাসরি গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে টাটা পাওয়ার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল হলো সামিট গ্রুপের বিদ্যুৎ উৎপাদনের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান। আজিজ খান জানিয়েছেন, ভারতের নীতিগত বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগ স্থগিত করা বা উচ্চ ঝুঁকির কারণে আর্থিক শর্ত পুনর্বিবেচনার মতো বিকল্পগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নীতির দ্রুত পরিবর্তন সবসময়ই উদ্বেগজনক। কারণ এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রয়েছে।

সামিটপ্রধান উল্লেখ করেছেন, এই নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে নেপাল ও ভুটানে নির্মিত জলবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ভারত হয়ে যে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কথা ছিল, সেখানে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেছে।

তিনি বলেছেন, আন্তসীমান্ত বিনিয়োগের বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে তার কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশে নতুন সরকার টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি প্রদান আইন স্থগিত করার সিদ্ধান্তও প্রকল্প পর্যালোচনার কারণ বলে উল্লেখ করেছেন আজিজ খান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: