বর্তমানে চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এ অবস্থায় বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, বার্ষিক উন্নয়ন ও বেসরকারি বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা উচ্চাভিলাষী হলেও বাস্তবসম্মত নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। ২ জুন,শুক্রবার বাংলাদেশের রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, “আমরা যদি বৈদেশিক আয়ের দিকে তাকায় তাহলে দেখব রেমিট্যান্স নিম্নমুখী। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কিন্তু নিম্নমুখী। বৈদ্যুতিক এবং জ্বালানি খাতে ব্যাপক একটা ঘাটতি দেখা গেছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত দুই অর্থবছরের উন্নয়নের যে সূচক দেখানো হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।”
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, “আমরা যদি সরকারি বিনিয়োগের হার দেখি সেটা ৬ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অংশ হিসেবে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ ২০২৪ সালের জন্য ধরা হয়েছে। কিন্তু আসলে ২০২৩ সালে আমরা দেখেছি যেটা ধরা হয়েছিলো, সেটা কম হয়েছে এখন পর্যন্ত, এবং সেটা ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। এখান থেকে লাফ দিয়ে ২৭ শতাংশ কীভাবে হবে? সেটা আমাদের কাছে মনে হচ্ছে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষা।”
ফাহমিদা খাতুন বলেন, “ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ ১৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এই বছরের ঋণপ্রবাহ যেটা ধরা হয়েছে সেটা গত বছরের ধরা ঋণপ্রবাহের সঙ্গে মিলছে না। এ ছাড়া ব্যক্তি খাতের যে বিনিয়োগের হার ধরা হয়েছে, সেটা এমন ঋণপ্রবাহ দিয়ে কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সাত লাখ ৬১ লাখ ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। আগামী অর্থবছরের বাজেটের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। এরপর বাজেট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর আগামী ৪ জুন অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস হবে আগামী ২৬ জুন। এর আগে ২৫ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অর্থবিল পাস করা হবে। বাজেট কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: