কোটাসংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় অন্তত ১৫০ জন নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে – বাংলাদেশের সাথে অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি আলোচনা স্থগিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। প্রথম দফার এই আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল আগামী সেপ্টেম্বর মাসে। তবে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির আলোকে তা স্থগিত করা হয়েছে বলে ইইউর একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
ইইউয়ের পররাষ্ট্র-বিষয়ক মুখপাত্র নাবিলা মাসরালি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে পাঠানো এক ইমেইলে বলেছেন, 'উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে, বাংলাদেশের সাথে আগামী সেপ্টেম্বরে অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির প্রথম দফার আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। আলোচনার জন্য নতুন কোনো তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।'
বাংলাদেশ ও ইইউয়ের মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল এ চুক্তির অধীনে। অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে থাকে। ইইউ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ২০ দশমিক ৭ শতাংশই হয়েছে ইউরোপীয় এই ব্লকের সঙ্গে।
এর আগে গত সপ্তাহে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রতিক্রিয়ার নিন্দা জানান ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল। বিশেষত আন্দোলনকারীদের 'দেখামাত্র গুলির নির্দেশ' দেওয়া ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গণগ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধবংস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে আলোচনা স্থগিত করা হয়নি এমনটা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১০ সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন, আলোচনার সময়সূচি এর সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এটি পিছিয়ে নভেম্বরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের এই প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইইউ।
বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব উত্তম কুমার কর্মকার বলেন, 'জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের কারণে এটি পেছানো হয়েছে, সাম্প্রতিক সহিংসতার আগেই এই সিদ্ধান্ত হয়।'
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, বাংলাদেশ যখন চড়া মূল্যস্ফীতি, তরুণদের বেকারত্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পড়তি দশাসহ নানাবিধ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে, তারমধ্যে আলোচনা স্থগিত করার ঘটনা বাংলাদেশের জন্য ইইউয়ের সহায়তাকে প্রভাবিত করতে পারে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: