দুই বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ডলার সংকট চলছে। গত কয়েক মাস ধরে এ সংকট চরমে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংঘর্ষে হতাহতের জেরে অনেক প্রবাসী বৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন করছেন। ফলে রেমিট্যান্স আহরণে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী করে তুলতে কয়েকটি ব্যাংককে বেশি দরে ডলার কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৮ জুলাই, রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক মৌখিকভাবে এ নির্দেশনা দিয়েছে। বেশি রেমিট্যান্স আহরণ করে এমন এক ডজন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ ধরনের নির্দেশনা পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, নতুন ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর পর ব্যাংকগুলোতে ডলার রেট ছিল সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা। তবে বেশি দরে ডলার কেনার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মৌখিক নির্দেশ পাওয়ার পর বেশ কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্স কেনার জন্য ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৮ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত রেট অফার করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুলাই মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসে ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রতিদিন গড়ে আসে সাত কোটি ৯০ লাখ ডলার। তবে এর পরের এক সপ্তাহে (১৯-২৪ জুলাই) বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসে মাত্র সাত কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে পুরো জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেকটাই নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ বাংলাদেশে ইন্টারনেট যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রমও বন্ধ ছিল। ফলে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব হয়নি। ফলে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করাও সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই সাম্প্রতিক ঘটনার জেরে অনেক প্রবাসী রেমিট্যান্স ব্লকেডের ডাক দেয়। ফলে আরেক দফা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যায় বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স আহরণ। সে কারণেই চলমান সংকট মোকাবেলায় ডলারের রেট বাড়িয়ে দিয়ে রেমিট্যান্স সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: