সহযোগিতা না পেলে ফেসবুক বন্ধ করে দেবে সরকার: জুনাইদ আহমেদ পলক

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৭ জুলাই ২০২৪ ১০:৪১

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, অপপ্রচার ও গুজব প্রতিরোধে সহযোগিতা না করলে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেবে সরকার। ১৭ জুলাই মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।

বাংলাদেশে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য অপতৎপরতা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ করব। পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক কর্তৃপক্ষ যারা আছেন তাদেরও অনুরোধ করব, তারা যাতে বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন। ধর্মীয় অনুভূতি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাদের ছাত্রছাত্রী, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যেন কোনো ধরনের মিথ্যা গুজবকে তারা প্রশ্রয় না দেয়। তাদের কাছ থেকে আমরা যদি সহযোগিতা না পাই, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। বাংলাদেশে ফেসবুকের লিয়াজোঁ অফিস করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। কিন্তু তারা তাতে সাড়া দিচ্ছে না-এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বড় একটি সংখ্যার মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ফেসবুক এখান থেকে বৈধ ও অবৈধ উপায়ে যে আয়টা করে, সেটা বিবেচনায় তাদের বাংলাদেশকে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশের আইন, ধর্মীয় মূল্যবোধ, নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা অনেকবার বলেছি। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, তারা (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) বাংলাদেশের জন্য তাদের তেমন কোনো দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ আমরা দেখছি না। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমেও বলছি, আনুষ্ঠানিকভাবে দাপ্তরিকভাবে আবারও কঠোর ভাষায় তাদের লিখব। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের অফিস, তাদের ডাটা সেন্টার, তাদের সব কার্যক্রম যাতে নিবন্ধিত করে।

তিনি আরও বলেন, আমার আপনার তথ্য আমাদের অজান্তেই তারা ব্যবহার করছে তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য। তিনি বলেন, আমরা কোনটা পছন্দ করি, কোন রেস্টুরেন্টে খাই কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করি, কোন ধরনের সিনেমা দেখতে পছন্দ করি, কী ধরনের পোস্ট দিই, কোন ধরনের কাপড় আমি পরি-এই তথ্য-উপাত্তগুলো তারা গোপনে সংগ্রহ করে আমাদের সামনে বিজ্ঞাপনগুলো প্রদর্শন করে। যে বিজ্ঞাপন থেকে তারা আয় করে সেটার অংশীদারত্ব কিন্তু আমি পাই না। আমাদের যে তথ্য তারা অন্য কোম্পানিকে দিচ্ছে, সেটা কিন্তু আমাদের অনুমতি ছাড়াই করছে। আইনগতভাবেও এটা অপরাধ এবং মানবিকভাবেও অমানবিক।

সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘টেন মিনিট স্কুল’-এর জন্য ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড বাতিল করা হয়েছে। টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক কোটা আন্দোলনের পক্ষে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বিনিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। জানতে চাইলে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বিনিয়োগ বাতিলের কারণ প্রকাশ্যে জানানো চুক্তির বরখেলাপ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ?আমি বলব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেই হোক না কেন, অবশ্যই দেশের প্রতি, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এগুলো সমুন্নত রাখা উচিত। এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সাবেক শিক্ষার্থী আয়মান সাদিক। ঢাবির সাদা-কালো লোগোর ওপর ছোপ ছোপ রক্তের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে আয়মান লিখেছেন, ‘রক্তাক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়! আমার ক্যাম্পাসে রক্ত কেন? প্রতিবাদ জানাই। মাত্র ১০ মিনিটে তার এ পোস্টে ৩০ হাজার মানুষ রিয়্যাক্ট করেছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: