গত জুন শেষে আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম- ৬ অনুযায়ী, নিট রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক। তবে প্রকৃত পরিমাণ কত তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি। এবারই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) স্বীকৃত নিট রিজার্ভ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানাল বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, শর্ত বাস্তবায়ন করতে আইমএফের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের ঋণ পাওয়ার পর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে বিপিএম-৬ পদ্ধতির গ্রস রিজার্ভের তথ্য জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নিট রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করবেন না।
সেই থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের তিনটি হিসাব করে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে গত জুন শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ এর গ্রস হিসাবে তা ২১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার ও নিট রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
নিট রিজার্ভ হচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি থেকে সকল প্রকার দায়-দেনা বাদ দেওয়ার পর যা থাকে। আইএমএফের সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিট রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করে থাকে।
এ হিসাবে নিট রিজার্ভের চেয়ে ১০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার বেশি দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, কোনো দেশের আমদানি ব্যয় মেটাতে তিন মাসের মতো রিজার্ভ থাকতে হয়। নিয়ন্ত্রণ করার পরেও বাংলাদেশের গড়ে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি ব্যয় হচ্ছে প্রতি মাসে। গত মাসে তা ছয় বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে।
এ হিসাবে তিন মাসের আমদানি দায় মেটানোর মতো রিজার্ভ হাতে নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের।
আইএমএফ ও কয়েকটি সংস্থার পাশাপাশি কোরিয়া থেকে আসা ঋণ এবং রেমিটেন্স মিলিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, গত ২৭ জুন বাংলাদেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম৬ পদ্ধতিতে তা ২২ বিলিয়ন ডলার।
এর তিন দিন পরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবেই রিজার্ভ কমলো ৩৪ কোটি ডলার।
তৃতীয় কিস্তি ছাড় পেতে জুন শেষে নিট রিজার্ভ ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার রাখতে শর্ত দিয়েছে আইএমএফ, যা আগের শর্তে ছিল ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার।
ঋণের অর্থ দিয়ে প্রথমবারের মতো আইএমএফের রিজার্ভ সংক্রান্ত শর্ত পরিপালন করতে পারল সরকার।
নতুন শর্ত অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ ১৪ দশমিক ৮৮ ও ডিসেম্বর শেষে তা ১৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে বাংলাদেশকে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: