করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশী ব্যবসায়ী শীর্ষ সংগঠন

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৮ জুন ২০২৪ ১১:০১

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের ১৫ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ঘরে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে অর্থমন্ত্রী নতুন বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমায় কোনো ছাড় দেননি। তার মানে, বার্ষিক আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি হলে আয়কর দিতে হবে। সে জন্য মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় নির্ধারণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

সংগঠনটির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয়, মূল্যস্ফীতি ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় এনে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। প্রস্তাবটি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় সরকারকে এই করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।’

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম এসব কথা বলেন। শনিবার বেলা পৌনে তিনটায় রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আইকন ভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি আমিন হেলালী, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে গত বৃহস্পতিবার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাজেটের এই আকার বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তবে তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সুশাসন ও যথাযথ তদারকি দরকার। বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও তদারকির মান ক্রমাগতভাবে উন্নয়নের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এবং পরিকল্পনা নিশ্চিত করা জরুরি।

বাজেটে আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পৌনে ৭ শতাংশ আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য সাড়ে ৬ শতাংশ ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির হার কমিয়ে এনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হবে বলে আমরা মনে করি। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতেই হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট ও ভোগান্তি বাড়বে।’

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি মেটাতে সরকারকে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা নিতে হবে। এর মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে নিতে হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এই বিষয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, সরকারকে সুদের বোঝা টানতে হচ্ছে। ব্যাংকব্যবস্থা থেকে অধিক মাত্রায় সরকারের ঋণ গ্রহণ বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। বাজেট-ঘাটতি মেটাতে স্থানীয় ব্যাংকব্যবস্থার পরিবর্তে যথাসম্ভব কম সুদে ও সতর্কতার সঙ্গে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়নের জন্য নজর দেওয়া যেতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: