সৌদি আরবে কর্মরত ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকের পাসপোর্ট নবায়ন করবে সরকার। আজ রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে সৌদি আরবের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই তথ্য জানান।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। এর সংখ্যা কত আমাদের জানা নেই। তাঁরা (সৌদি কর্তৃপক্ষ) আমাদের জানিয়েছেন, ৬৯ হাজার। সৌদি আরবের নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট না থাকলে তাঁদের ফেরত পাঠায়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে সৌদি আরবের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি মোতাবেক, তাঁরা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবেন না। তবে তাঁদের (রোহিঙ্গা) পাসপোর্ট রিনিউ (নবায়ন) করে দিতে হবে— এমন শর্ত ছিল চুক্তিতে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা ধীরে এগোচ্ছি কেন? কিংবা আমাদের কোনো অসুবিধা আছে কি না সেটা দেখার জন্য তাঁরা এসেছিলেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমাদের উভয় দেশের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলাপ হয়েছে।’
৬৯ হাজার রোহিঙ্গার দায়িত্ব কোন রাষ্ট্র নেবে— বাংলাদেশ নাকি সৌদি আরব? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আবর কিন্তু ফেরত পাঠাবে না কাউকে। আবার সৌদি সরকার রোহিঙ্গাদের ওই দেশের নাগরিকত্ব দেবে না। তাহলে কীভাবে থাকবে? সে জন্য তাঁদের কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন। সে জন্য তাঁরা আমাদের অনুরোধ করেছিলেন। আমরা গত বছর সেটি (চুক্তি) সই করেছিলাম। সেখানে আমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে তাঁরা এসেছিলেন।’
সৌদিতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা কি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা তো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়েই গিয়েছিলেন। সুতরাং আমরা শুধু তাঁদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দেব। তাঁদের নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে যেমন আছে তেমনি থাকবে।’
বৈঠকে অন্যান্য আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময় সৌদি আরবে গিয়ে অবস্থান করা প্রবাসীদের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে সৌদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাঠালে দুই দেশের বাহিনীর সক্ষমতা বাড়বে।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সৌদি আরব দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তির জন্য প্রস্তাব করেছে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের জন্য এটি সুবিধা হবে।’
এ বছর হজ নিয়ে সুন্দর ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হজযাত্রীদের বাংলাদেশেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যাবে। সৌদিতে গিয়ে ইমিগ্রেশন করতে হবে না। “রুট টু মক্কা” নামে আরেকটি সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এতে হজযাত্রীরা তাদের লাগেজগুলো বাংলাদেশেই জমা দেবেন। সৌদি গিয়ে তারা যে হোটেল বা বাড়িতে উঠবেন সেখানে লাগেজগুলো পৌঁছে যাবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আলোচনায় সৌদিতে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন সৌদি আবরের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভবিষ্যতে এই সুযোগ আরও বাড়বে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: