মানবাধিকার কর্মকর্তা সেজে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সসহ উন্নত দেশগুলোতে মানবপাচারে জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। চক্রের মূলহোতা মহিউদ্দিন জুয়েল ও উজ্জল হোসাইন মুরাদ ‘প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ নামে কথিত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে এ অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন।
বাংলাদেশী এই চক্রের সদস্যরা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার কথা বলে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ভুয়া তথ্যযুক্ত ই-মেইল পাঠিয়ে আমন্ত্রণপত্র আনতেন। তা দেখিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন বড় অংকের টাকা। বাংলাদেশে বসে এভাবেই চক্রটি জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসকে ধোঁকা দিয়ে মানবপাচার করে আসছিল। ২০১৯ সাল থেকে চক্রটি এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।
তাদের জালিয়াতি একসময় নজরে আসে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের। পরে বাংলাদেশের ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সহকারী রিজিওনাল সিকিউরিটি অফিসার মিকাইল লি গত ২১ মে, রোববার গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। সে মামলার তদন্ত করে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
জালিয়াতির সত্যতা পেয়ে ২১ মে, রোববার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া পাঁচজন হলেন- মহিউদ্দিন জুয়েল, মো. উজ্জ্বল হোসাইন ওরফে মুরাদ, মো. এনামুল হাসান, শাহাদাদ ও হাদিদুল মুবিন।
বাংলাদেশের তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, চক্রের মূলহোতা মহিউদ্দিন জুয়েল ও উজ্জ্বল হোসাইন একটি আন্তর্জাতিক মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের হোতা। তারা প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের কথিত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের আড়ালে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২০১৯ সাল থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সসহ উন্নত দেশগুলোতে মানবপাচার করে আসছিল।
বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ বলেন, গ্রেফতার মহিউদ্দিন জুয়েল ও উজ্জ্বল হোসাইন প্রতারণার অর্থ কোথাও বিনিয়োগ করেছে, নাকি বিদেশে পাচার করেছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ভিসাপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে ডিসি তারেক বিন রশিদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাসহ যে কোনো দেশের ভিসার জন্য সঠিক ও নির্ভুল তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। মিথ্যা তথ্য দিলে সেটি গুরুতর অযোগ্যতা ও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। প্রয়োজনে আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র : জাগো-নিউজ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: