ভর্তুকি কমাতে বাংলাদেশে বছরে চারবার বাড়বে বিদ্যুতের দাম

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩ মে ২০২৪ ০৭:০৪

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

 

আগামী তিন বছর ধরে প্রতিবছর চারবার করে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করবে বাংলাদেশ সরকার। ভর্তুকির চাপ সামলাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এভাবে ১২ বারের সমন্বয়ে বিদ্যুতের দাম উৎপাদন খরচের সমান বা এর কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে।

২ মে বৃহস্পতিবার সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সাথে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদ্যুৎ-সচিব মো. হাবিবুর রহমান বিদ্যুৎ বিভাগের নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির গবেষণা বিভাগের সামষ্টিক অর্থনীতি শাখার প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। সেখানেই আইএমএফ প্রতিনিধিদলকে বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের বিষয়টি জানানো হয়।

বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধিদল জানতে চেয়েছিল, বিদ্যুৎ খাতে সরকার কীভাবে এবং কতটা ভর্তুকি কমাবে। বিদ্যুৎ বিভাগ এর জবাবে জানায়, বিদ্যুতের দাম প্রতিবছর চার দফা সমন্বয় করা হবে।

জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৩ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বাংলাদেশ সরকার ওই অর্থবছরে এ খাতে ৩৯ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা ভর্তুকি রাখে। আইএমএফের পরামর্শ মেনে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হলে ভোক্তাপর্যায়ে গড়ে বিদ্যুৎ ইউনিটের দাম হবে প্রায় ১৫ টাকা, যা এখন ৮ টাকা ৯৫ পয়সা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে দেওয়া ক্যাপাসিটি চার্জের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, চুক্তি থাকায় সে অনুযায়ী ক্যাপাসিটি চার্জ দিতেই হবে। তবে ইতিমধ্যে সেখানে ‘বিদ্যুৎ নেই, বিলও নেই’ পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। চুক্তি নবায়নের ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাদ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

আইএমএফের প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার পৃথক পৃথকভাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সঙ্গেও বৈঠক করে। পেট্রোবাংলা ও বিপিসি আইএমএফকে জানায়, গ্যাস ও জ্বালানি তেলে ভর্তুকির তেমন চাপ নেই। তেলের দাম নিয়ে স্বয়ংক্রিয় যে পদ্ধতির কথা আইএমএফ জানিয়েছিল অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে দেশে বাড়বে, কমলে কমবে, সেটিই কার্যকর হয়েছে। ফলে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। তিন মাস ধরে এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন হচ্ছে। তাই জ্বালানি তেলে আর কখনও ভর্তুকি দিতে হবে না।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে আইএমএফ। সে সময় তারা বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনা, জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুসরণ করাসহ বিভিন্ন শর্তারোপ করে। ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশ দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি হাতে পেয়েছে। চলতি মে মাসে তৃতীয় কিস্তির ৭০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: