বাংলাদেশের প্রথম বিশেষায়িত পেঁয়াজ সংরক্ষণকেন্দ্র উদ্বোধন হল আজ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২ মে ২০২৪ ১৯:২৯

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

ময়মনসিংহের ভালুকার ভরাডোবায় বাংলাদেশের প্রথম বিশেষায়িত ‘জায়ান্ট এগ্রো পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র’ নির্মিত হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেঁয়াজের বীজ পরীক্ষার বিভিন্ন উপায়, বক্স-ভিত্তিক পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করা হয়।

উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য পেঁয়াজ উৎপাদনের টার্গেট নিয়ে আমরা কাজ করছি, কৃষকদের উৎসাহিত করছি। বর্তমানে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। কৃষক স্বল্প মূল্যে বীজ পায়, চাষাবাদের উপকরণ পায় সেটাই সরকারের লক্ষ্য।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণকেন্দ্রে আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে বছরব্যাপী দেশবাসীকে পেঁয়াজ সরবরাহ করতে পারবে। এমন উদ্যোগের জন্য আমি নেদারল্যান্ডস সরকার ও দেশি বিদেশি সকল অংশীদার প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানাই।’

আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বছরব্যাপী পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে পেঁয়াজের আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে আনা হবে এবং ভোক্তাদের ধারাবাহিকভাবে ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহের লক্ষ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে ৫০০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, অনিয়ন ইমপ্যাক্ট ক্লাস্টার প্রকল্প ২০২২-২৪ এর আওতায় পেঁয়াজ প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করা হয়। নেদারল্যান্ডস সরকার ও বিভিন্ন বাংলাদেশি ও নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশি ভোক্তাদের জন্য ভালো মানের পেঁয়াজের ধারাবাহিক সরবরাহের পাশাপাশি চাষিদের কাছে মানসম্পন্ন পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা, পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকল্পটি ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশি পেঁয়াজে স্বনির্ভরতা অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে অবদান রাখছে।

এ বিষয়ে জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফিরোজ হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পচনশীল বস্তু হওয়ায় প্রতি বছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে দেশব্যাপী পেঁয়াজের সংকট দেখা যায়। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে সংরক্ষণের অভাবেই নষ্ট হয় ৩০ ভাগ পেঁয়াজ। যার ফলে প্রান্তিক কৃষক ও ভোক্তা উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ৫০০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। আমরা এই পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বছরব্যাপী ধারাবাহিকভাবে ভোক্তাদের ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহ করতে পারব। পাশাপাশি কৃষকেরাও পেঁয়াজ যৌক্তিক দাম পাবেন। সামগ্রিকভাবে, কৃষক ও ভোক্তা পর্যায়ে অবদান রাখার জন্যই জায়ান্ট এগ্রো এই প্রজেক্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে।’

জায়ান্ট এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ হাসানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন—নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডিউরেন, ডেল্টাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. মাটিন ভারব্রুগেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, অনিয়ন ইমপ্যাক্ট ক্লাস্টার প্রকল্পের সমন্বয়কারী ইরমা ভারহুসেল, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সির প্রতিনিধি নাদিয়া ভ্যান ডি উয়েম।

সংরক্ষণাগার ও প্রসেসিং সেন্টার নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন—ভেজিটেবল প্রসেসিং সেন্টার অলরাউন্টের মার্কেটিং প্রধান মোহাম্মদ ফারুক, তীর সীড প্রাইভেট লিমিটেড সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ ইশতিয়াক আলম।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: