বাংলাদেশে ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি তেলের দাম দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ২২ মে, সোমবার রাতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দুটি চিঠির বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে জ্বালানি মজুদ আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে ৬টি আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানির কাছে বাংলাদেশের পাওনা ৩০ কোটি ডলার। এ অবস্থায় কিছু কোম্পানি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কম তেল কার্গো বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। বেশ কয়েকটি সংস্থা জ্বালানি না পাঠানোর হুমকিও দিয়েছে।
সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের রপ্তানি নির্ভর পোশাক শিল্পকে প্রভাবিত করেছে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের জন্য দায়ী সংস্থাটিও সতর্ক করেছে, মুদ্রা সংকটের কারণে অর্থ প্রদানে বিলম্ব হয়েছে।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশের জ্বালানি আমদানি ও বিপণন নিয়ন্ত্রণকারী 'বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন' দেশটির বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ভারতের পাওনা টাকা ১০০ কোটি রুপিতে পরিশোধের অনুমতি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। রয়টার্স বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠিগুলোর বিষয়ে জানতে চেয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়টার্সকে জানিয়েছে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ যৌক্তিকভাবে কাজ করছে এবং ডলার বিতরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
গত ৯ মে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছে, 'বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলারের ঘাটতি ও চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অক্ষমতার কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সময়মতো আমদানি রপ্তানির টাকা পরিশোধ করতে পারছে না।'
এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে বিপিসি ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি বিপিসিকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার এবং এলএনজি আমদানিকারক পেট্রোবাংলাকে দুই বিলিয়ন ডলার দিয়েছে।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মাজবাউল হক রয়টার্সকে বলেন, 'আমরা যৌক্তিকভাবে সবকিছু পরিচালনা করছি। বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ সব উত্থান-পতন সত্ত্বেও আমরা ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক রিজার্ভ বজায় রাখছি।'
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিপিসি প্রতি মাসে ৫ লাখ টন পরিশোধিত তেল এবং ১ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে।
সূত্র : রয়ার্টস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: