এস আলমের চিনিকলের বিষাক্ত তরলে কর্ণফুলীতে ভেসে উঠছে মরা মাছ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:০৭

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কর্ণফুলীতে এস আলম গ্রুপের চিনিকলের আশপাশে কর্ণফুলী নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে উঠছে। এর মধ্যে কিছু মরা মাছ, কিছু দুর্বল হয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় ভেসে উঠছে। এছাড়াও কাঁকড়া, সাপ-ব্যাঙসহ আরও জলজ প্রাণী বিভিন্ন অংশে মরে পড়ে থাকতে দেখেছেন স্থানীয়রা। ৬ মার্চ বুধবার এ তথ্য জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম।

এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গুদামে লাগা আগুন এখনো পর্যন্ত পুরোপুরি নেভেনি। ভেতরে এখনো আগুন জ্বলছে। বাইরে ধোঁয়ার বের হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

বুধবার ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছেন, ‘আগুন পুরোপুরি নেভাতে আরও এক-দুইদিন সময় লাগবে।’

এদিকে আগুন লাগার পর চিনিকলের গুদামের অপরিশোধিত চিনির গলিত পানি সরাসরি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে দূষিত হয়েছে নদীর পানি। গতকাল মঙ্গলবার থেকে নদীতে মাছ মরে ভেসে উঠছে।

জানা যায়, ১ নম্বর গুদামটির পোড়া চিনির গলিত পানি দুটি নালা হয়ে সরাসরি গিয়ে পড়ছে কর্ণফুলী নদীতে। এলাকাজুড়ে দুর্গন্ধও ছড়িয়ে পড়েছে। পানিতে পোড়া তেল ও ফেনার মতো ভাসছে চিনির বর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষিত হয়ে মারছে মাছ।

স্থানীয়রা নদী থেকে হাত দিয়েই মাছ ধরছে। আবার কেউ কেউ জাল ফেলেও মাছ ধরছে। বিভিন্ন বয়সী কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষকে ভেসে ওঠা মাছ ধরতে দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নদীতে নোঙর করা জাহাজের শ্রমিকরাও।

মাছ ধরতে আসা লোকজন বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে নদীর পানি লাল হয়ে গেছে। লাল পানিতে মৃত ভোইল্ল্যা, গলদা চিংড়ি, টেংরা মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আগে কখনো এভাবে মাছ ভাসতে আমরা দেখিনি।’

গবেষকেরা বলছেন, অপরিশোধিত চিনি আগুনে পুড়ে গলে পরিণত হওয়া বিষাক্ত রাসায়নিক পানির সঙ্গে মেশার কারণে মাছ মরে ও দুর্বল হয়ে ভেসে উঠছে।

৫ মার্চ মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কারখানার ড্রেন ও নদী থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘নমুনা পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পানির বিভিন্ন উপাদানের কী ক্ষতি হয়েছে তা বলতে পারবো।’

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। চিনির আগুনে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে আগুন নেভাতে সময় লাগছে।’

এর আগে, গত ৪ মার্চ বিকেল চারটার দিকে এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সঙ্গে যুক্ত হন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সদস্যরাও। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ১১টার দিকে আগুন লাগার সাত ঘণ্টা পর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর আরও একদিন পেরিয়ে গেলেও আগুন পুরোপুরি নেভেনি।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: