মাত্র ৩০ হাজার টাকায় বাংলাদেশি হচ্ছে রোহিঙ্গারা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৩:১২

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে অবস্থানকারী কোনো রোহিঙ্গা চাইলে মাত্র ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হয়ে যাচ্ছেন ওই দেশের নাগরিক। এক চক্রের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন করার পর অসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) নিয়েছেন।

ওই চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতারের পর ১৯ ফেব্রুয়ারি, সোমবার এমন তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতাররা হলেন মো. শহিদুল ইসলাম মুন্না, মো. রাসেল খান, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুর রশিদ ও সোহেল চন্দ্র।

ডিবি জানিয়েছে, চক্রটি বাগেরহাট, নারায়ণগঞ্জ এবং দিনাজপুর জেলার ভিন্ন ভিন্ন থানা এলাকা থেকে ভুয়া জন্মনিবন্ধন করে দিত। প্রতিটি কাজে ৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন তারা। এজন্য ফেসবুকে বিভিন্ন নামে পেজ খুলে প্রচারণা চালাতেন। তাদের মাধ্যমে অনেক দাগি আসামিও নিজের নাম-পরিচয় পালটিয়ে ভুয়া জন্মনিবন্ধন নিয়েছেন। আবার অনেকে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করেন।

সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতার রশিদ দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর এবং সোহেল বিরলের ১০ নম্বর রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কর্মরত।

সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের জন্মনিবন্ধনের এক্সেস ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিরল উপজেলার বাসিন্দা হিসাবে দেখিয়ে ভুয়া জন্মসনদ কপি এবং নম্বর দিয়ে আসছিল চক্রটি।

তাদেরকে এসব কাজ দিতেন গ্রেফতার মোস্তাফিজুর, মুন্না ও রাসেল। মুন্না বাগেরহাটের ও রাসেল নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। তারা পাঁচজনই একে অপরের পরিচিত। পরস্পরকে সহায়তা করে স্থানীয় নাগরিকদের পাশাপাশি কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের বিরলের অধিবাসী দেখিয়ে জš§সনদ সরবরাহের কাজ করে আসছিল।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যমতে এ কাজে তারা সবাই আনুপাতিক হারে লাভ পেতেন। কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বাংলাদেশের অন্যান্য পৌরসভা ও ইউনিয়নে তাদের লোকজন রয়েছে। যারা কয়েক হাজার মানুষের ভুয়া জন্মনিবন্ধন করে দিয়েছেন। এসব জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে অনেক রোহিঙ্গা অবৈধভাবে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে যাচ্ছে। অনেক অপরাধী অপরাধ করে নিজ এলাকার বাইরে আরেকটি জন্মনিবন্ধন করে নতুন করে অপরাধ শুরু করছেন।

অনেকে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরিতে এই জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করেছেন। যাতে ব্যাংক লোন ও অনলাইন অপরাধে পুলিশকে ফাঁকি দিতে পারেন। এসব জন্মনিবন্ধন দিয়ে অনেক কুখ্যাত খুনি এবং রাষ্ট্ররিরোধী অপরাধী চক্র নিজেদের পরিচয় গোপন করে ফেলেন। নতুন পরিচয়ে আবার অপরাধ শুরু করতে পারেন।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি নয় বলে তাদের বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে ভুয়া জন্মনিবন্ধন নিলে তাদের সুবিধা হয়। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ব্যবহারকারী সবাইকে তাদের আইডি পাসওয়ার্ড অধস্তনদের কাছে দেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: