নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক, দাবি ৬ সংগঠনের

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ ১৬:০৬

গ্রাফিক্স গ্রাফিক্স

বাংলাদেশে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ৬টি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন। আজ শুক্রবার এ বিষয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের আগে বিরোধী রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতি দেওয়া সংগঠনগুলো হলো—এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল), ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন (সিআইভিআইসিইউএস), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ), এশিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক (এডিএন), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রোজেক্ট (অস্ট্রেলিয়া) ও অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন)।

যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, এই নির্বাচন যথাযথ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়নি।

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নির্বাচন হয়েছে কি-না, সেই বিষয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে। পাশাপাশি ভোটারদের চাপ প্রয়োগ এবং ভোটের ফলাফলে কারচুপি সহ নির্বাচন নিয়ে বহু খবর ও তথ্য-প্রমাণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলোতে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের চিত্র দেখা গেছে।

বলা হয়েছে, এসব বিষয় গুরুতরভাবে গণতন্ত্রের মূল নীতিসমূহকে ক্ষুণ্ন করে।

বিবৃতিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ এবং দমনের ঘটনা উল্লেখ করে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি বিরোধীদের ভয় দেখানো, হয়রানি, মিথ্যা অভিযোগে আটক এবং নেতা ও কর্মী সমর্থকদের ওপর পরিচালিত সহিংসতার জন্য কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, সভা-সমাবেশ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শুধু সরকারপন্থী দল, সংগঠন ও ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে। আর বিরোধী নেতা-কর্মী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এসব বিষয় প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে খর্ব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাম গণতান্ত্রিক জোট, গণতন্ত্র মঞ্চসহ প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গে টেনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতেরও অভিযোগ তুলেছে ওই ৬ সংগঠন।

কোনো বিশেষ প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোটকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইচ্ছামতো ভোটদানের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ব্যালটে সিল মারা, ভুয়া ভোটারের উপস্থিতি এবং এমনকি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের পক্ষে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ব্যবহারেরও অভিযোগ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ভোটের হার নিয়েও। নির্বাচন কমিশন বলা ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট সারা দেশের ভোটচিত্রের সঙ্গে মেলে না বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

বাংলাদেশের মানুষ স্বচ্ছ নির্বাচন পাওয়ার অধিকারী দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়—একটি অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করছি। আর এই নির্বাচন হতে হবে সব রাজনৈতিক দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্থা ও একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে।

এ ছাড়া শুধু রাজনৈতিক মতপার্থক্যের জন্য সাজানো মামলায় কারাবন্দী সব ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: