আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইউনূসের সাজা প্রসঙ্গ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২ জানুয়ারী ২০২৪ ১৪:১৬

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইউনূসের সাজার সংবাদ : সংগৃহীত ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইউনূসের সাজার সংবাদ : সংগৃহীত ছবি

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সবাইকে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

নতুন বছরের প্রথম দিনে ১ জানুয়ারি, সোমবার বাংলাদেশের রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা ৮৪ পৃষ্ঠার রায় পড়া শেষে এ আদেশ দেন। রায় শুনতে এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অনেক বিশিষ্ট নাগরিক।

পরে আপিলের শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত। শিগগিরই আপিল করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এই নোবেলজয়ীর বিরুদ্ধে রায়ের পরপরই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তাকে কারাদণ্ড দেয়ার সংবাদ।

ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৩ বছর বয়সী ইউনূস মাইক্রোক্রেডিট অর্থনীতির মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করেন। একপর্যায়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ‘রক্তচোষা’ বলে অভিযুক্ত করেন। এই নোবেলজয়ী ছয় মাসের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। আজ সোমবার শ্রম আইনের একটি মামলার রায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যদিও তার সমর্থকরা এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

এতে আরও বলা হয়, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে মৌখিকভাবে আক্রমণ করেন, যাকে এক সময় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ধরা হতো।

ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (বিবিসি) এ খবরের শিরোনাম করেছে ‘মুহাম্মদ ইউনুস : বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ীর কারাদণ্ড’। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।অধ্যাপক ইউনূসের সমর্থকরা বলছেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রায়ের পর এক বিবৃতিতে ড. ইউনূস বলেছেন, ‘আমার আইনজীবীরা আদালতে দৃঢ়ভাবে যুক্তি দেখিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে এ রায় সমস্ত আইনি দৃষ্টান্ত ও যুক্তির বিপরীত। আমি বাংলাদেশের জনগণকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে এক কণ্ঠে কথা বলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান, ফ্রান্স২৪, দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমসসহ আরও অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ড. ইউনূসের রায়ের বিষয়ে প্রতিবেদন করেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনই বেশিরভাগ গণমাধ্যম প্রকাশ করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বরাতে সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এটি ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৫০টি মামলার একটি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তাকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করেন শেখ হাসিনা।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘শ্রম আইনের মামলায় নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সাজা’। এতে বলা হয়েছে, ৮৩ বছর বয়সী ইউনূস তাঁর মাইক্রোফাইন্যান্স ব্যাংকের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশটির দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।ড. ইউনূসকে ‘গরিবের রক্তচোষা’ বলে অভিযোগ করেছিলেন শেখ হাসিনা।’

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে ‘গরিবের রক্ত চুষে নেয়ার’ অভিযোগ তোলেন শেখ হাসিনা। ২০২২ সালে তিনি এ-ও অভিযোগ করেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের তহবিল আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন ইউনূস। যদিও সেতু প্রকল্পের তহবিল আটকানোর এই অভিযোগ অস্বীকার করেন ইউনূস।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: