শিশুদের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে ‘টাইপ-২’ ডায়াবেটিস

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০২:৫৫

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, আক্রান্তের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। ২০১৭ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৯ লাখ। ২০২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ। ২০৪৫ নাগাদ সেটি দুই কোটি ছাড়াবে। গর্ভবতীদের ৮ থেকে ১৩ শতাংশ গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। আশঙ্কার কথা, শিশুদের মধ্যেও টাইপ-২ ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা এমন পরিস্থিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে, বাংলাদেশের অপরিকল্পিত নগরায়ন, ব্যস্ততা, খাদ্যাভাস ও কায়িক শ্রমের অভাবই দায়ি করছেন। ডায়েবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি শুধুমাত্র এই রোগটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। শরীরের অন্যান্য অঙ্গও আক্রান্ত হয়ে জটিল রুপ ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশে মোট কিডনি রোগীর ৫০ ভাগই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের ডায়াবেটিস ও কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইউশা এফ আনসারি বলেন, ডায়াবেটিসের কারণে ব্রেইনে, কিডনি, হার্টে রোগ হচ্ছে। অন্ধ হওয়ার ঝুঁকিসহ অঙ্গহানির ঝুঁকিও রয়েছে। এতো কিছুর পরে তো বলাই যায়, এটি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে।

আরও আশঙ্কার কথা, শিশুদের মধ্যে বাড়ছে টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এভাবে বাড়তে থাকলে ভবিষ্যত প্রজন্ম শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়বে।

ডা. ইউশা এফ আনসারি বলেন, অল্প বয়সে ডায়াবেটিস হয়ে তার কিডনি বিকল হয়ে গেছে এমন রোগীও আমরা পাচ্ছি। বাচ্চারা সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি একটু হাঁটতে যায়, দৌড়াদৌড়ি করে, বিকেলে খেলার মাঠে যায় তাহলে বলা যায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এটি।

ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইফ্ফাত আরা জাহান বলেন, এটা এখন অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়। এটি আগাতে আগাতে বাচ্চাদের মধ্যেও চলে এসেছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের একটিই উপায় আছে, সেটি হচ্ছে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং অভ্যাসের পরিবর্তন করা।

অনেকেই অজ্ঞতার কারণে নিজের আক্রান্তের খবরটি জানেন না। তেমনি আক্রান্তদের অনেকে মানেন না সঠিক নিয়ম-কানুন। বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ওষুধ আছে। তবে সেসব ওষুধ ব্যয়বহুল।

এ বিষয়ে ডা. ইফ্ফাত আরা বলেন, ডায়াবেটিস বৈশ্বিক মহামারি। এটি ক্রমশ বাড়ছে। আমার কাছে মনে হয়, এ জন্য চিকিৎসার পরিধি বাড়ানো দরকার। তিনি ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠান চালু এবং প্রসারের পরামর্শ দেন।

ডা. ইউশা এফ আনসারি বলেন, ডায়াবেটিস নিয়ে মূল কথা হচ্ছে, দ্রুত শনাক্ত এবং চিকিৎসা করা। এটি নিশ্চিত করতে পারলেই খারাপ জটিলতাগুলো হবে না।

যেকেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। তাই মাঝে মাঝে রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকরা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: