মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে উত্তাল মিরপুর

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:২৯

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আজও উত্তাল মিরপুর এলাকা। আজ ১ নভেম্বর বুধবার সকাল থেকেই মিরপুরে আবারও সড়কে অবস্থান নিয়েছে পোশাক শ্রমিকরা। এতে মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ১৪ নম্বর পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

শ্রমিকদের একটি বড় অংশ মিরপুর ১১ নম্বরে লাঠিসোঁটা হাতে অবস্থান নিয়েছে। এ সময় পোশাক শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবিতে স্লোগান দেন। বন্ধ করে দেয়া হয় আশেপাশের দোকানপাট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচারের দাবিতে তারা আবার আন্দোলনের নেমেছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে আন্দোলন শুরু করেছে তারা। রিকশাও এ পথে চলতে দেয়া হচ্ছে না।

প্রথমে পূরবী সিনেমা হলের সামনে থেকে তারা যায় মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর। সেখান থেকে যায় মিরপুর ১৩ নম্বর ও কচুক্ষেত বাসস্ট্যান্ডে আসে। এসব এলাকা থেকে বিভিন্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকদের নামিয়ে নিয়ে আসে আন্দোলনকারীরা।

এ সময় কয়েকটি গার্মেন্টসের ফটক ভাঙচুর করে শ্রমিকরা। সকাল ১০টার দিকে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে আবার মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের দিকে যায়।

মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, মিরপুরে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্ক আছে।

এই আন্দোলন দীর্ঘ এবং আরো সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দা সদস্যদের। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি কড়া নির্দেশনা জারি করা হয়েছে গার্মেন্ট শিল্পের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য। এ নিয়ে শিল্পমালিক এবং শ্রমিক নেতাদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দফায় দফায় বৈঠক চলছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য সংস্থাও কাজ করছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।  তবে শ্রমিকনেতারা বলেছেন, চলমান পরিস্থিতিতে বেতনভাতা বৃদ্ধি ছাড়া তারা ঘরে ফিরবেন না।

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত রোববার থেকে গাজীপুর, আশুলিয়া ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্ট শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। সোমবার গাজীপুরে আন্দোলনরত গার্মেন্ট শ্রমিকদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ গুলি ও টিয়ার শেল ব্যবহার করে। ওই দিন দুপুরের দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল রোড বন্ধ করে দেয়। এ সময় পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালালে রাসেল নামের এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাসেল মারা যান। এ ছাড়া আহত হয় আরো বহু শ্রমিক।

এই ঘটনার পর শ্রমিকরা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, পল্লবী, গাজীপুর, টঙ্গী ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামে। এসব স্থানে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শত শত রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ দিকে আন্দোলনরত এসব শ্রমিকের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন রাজধানীর পুরানা পল্টন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে। তারা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার দাবি জানান।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: