রপ্তানির আড়ালে ৩শ কোটি টাকা পাচার

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১৩

গ্রাফিক্স গ্রাফিক্স


শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর তৈরি পোশাক রপ্তানির আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়া, স্লোভেনিয়া, পানামা প্রভৃতি দেশে পাচারের তথ্য উদঘাটন করেছে। একইসঙ্গে পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শনাক্তও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এরমধ্যে ঢাকার সাতটি, গাজীপুরের দুটি ও সাভারের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, সৌদি আরব ও কাতারে রপ্তানি দেখিয়ে বিপুল এ অর্থ পাচার করেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সাভারের প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড, গাজীপুরের পিক্সি নিট ওয়্যারস ও হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড, ঢাকার ফ্যাশন ট্রেড, এম ডি এস ফ্যাশন, থ্রি স্ট্রার ট্রেডিং, ফরচুন ফ্যাশন, অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড, স্টাইলজ বিডি লিমিটেড ও ইডেন স্টাইল টেক্স।

৪ সেপ্টেম্বর, সোমবার শুল্ক গোয়েন্দার যুগ্ম পরিচালক মো. শাসমুল আরেফিন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি পোশাক পণ্যের চালান বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, এ কারণে পণ্যমূল্য বা বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসিত হচ্ছে না- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কাজ শুরু করে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিল অব এক্সপোর্ট ঘেটে সংস্থাটি জানতে পারে, তারা জালিয়াতি করে অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করেছে এবং বিল অব এক্সপোর্টের ২৪ নম্বর কলামে নমুনার কোড ২০ ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে কোনো অর্থ দেশে প্রত্যাবাসিত না হয়ে পুরো রপ্তানি মূল্য বাবদ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।

তদন্তকালে ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে এক হাজার ২৩৪টি পণ্যচালানে এমন জালিয়াতি করেছে। রপ্তানি সম্পন্ন হওয়া এসব চালানের বিপরীতে পণ্যের পরিমাণ ৯ হাজার ১২১ মেট্রিক টন, যার প্রত্যাবাসনযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভাব্য পরিমাণ ৩,৫৩,৬৬,৯১৮ ইউএস ডলার বা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানসমূহ টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, পোলো শার্ট প্রভৃতি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়া প্রভৃতি দেশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি দেখিয়ে অর্থপাচার করেছে।

ওই ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মূলত বিল অব এক্সপোর্টে ন্যাচার অব ট্রানজেকশনের কোড ২০ ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার করেছে।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিল অব এক্সপোর্টসমূহ পর্যালোচনায় বিল অব এক্সপোর্ট ও ইএক্সপিতে বর্ণিত তথ্যের মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই ওই ব্যাংকে লিয়েনকৃত নয়।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে ওই ব্যাংক সম্পর্কিত নয়। ফলে ব্যাংকটির মাধ্যমে বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সেলস কন্ট্রাক্ট বা ইএক্সপির রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসিত হয়নি বা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: