মিয়ানমারের রাখাইন ও আরকান রাজ্যে হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ৬ বছর পূর্ণ হলো। সংঘটিত ঘটনার সূত্রধরে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়, অন্তত ১২ লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে এই সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি। আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গারা নাগরিকত্বসহ কয়েকটি অধিকার ফিরে পেলে, সেদেশে ফিরতে আগ্রহী। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের নানা টালবাহানা আর মিয়ানমার সরকারের ছলচাতুরিতে নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকরা।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট। মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ ক্যাম্পে কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘটনের হামলার ঘটনায় রাখাইন ও আরকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় সে দেশের সেনাবাহিনী। এরপর ২৫ আগস্ট থেকে জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে বিতাড়িত করা হয়। এসব রোহিঙ্গারা প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বনভূমি ও পাহাডী জায়গায় আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ঢাকঢোল বাজানো হলেও, কার্যত আলোর মুখ দেখেনি সে প্রক্রিয়া। আশ্রিত এসব রোহিঙ্গারা নাগরিকত্বসহ কয়েকটি অধিকার ফিরে পেলে, নিজ দেশে ফিরতে চায় তারা। রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের পর্যটন শহর কক্সবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তারা মাদক চোরাচালান,খুন অপহরণ’সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তাই তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন চায় স্থানীয়রা, এমনটাই জানালেন, কক্সবাজার ৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন চায় বাংলাদেশ সরকার। এ লক্ষ্যে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সহযোগিতা চেয়েছে বলে জানালেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জিল্লুর রহমান।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সঠিক কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে ঝুলে আছে রোহিঙ্গা সংকট। তবে মিয়ানমার সরকারের বর্তমান অবস্থা ও রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক মহলের বর্তমান তৎপরতা নতুন করে সংকট সমাধানের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন এই আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।
সূত্র : পার্সটুডে
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: