বাংলাদেশের গাজীপুরে টঙ্গীতে চলন্ত ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। ১১ আগস্ট, শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস।
এর আগে ১০ আগস্ট, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালের চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বেশ কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।
যাত্রীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনটি টঙ্গীর আউটার সিগন্যালে প্রায় ২০ মিনিট থামিয়ে রাখা হয়। এই সুযোগে হঠাৎ ট্রেনটি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে ৩০ থেকে ৪০ জনের একদল দুর্বৃত্ত। এসময় আতঙ্কিত হয়ে যাত্রীরা ছোটাছুটি শুরু করতে থাকেন। কেউ কেউ ট্রেনের মেঝেতে শুয়ে পড়েন। এতে অন্তত ১৩ জন আহত হন। পরে দুর্বৃত্তরা ভেতরে প্রবেশ করে কয়েকজনের মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়।
স্টেশন এলাকার মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, রাত ১১টার দিকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এসে বিক্ষোভ করেন যাত্রীরা। তারা স্টেশন মাস্টারের অফিস ও ফাঁড়ি পুলিশ অফিস ঘেরাও করেন।
টঙ্গী রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ ছোটন শর্মা জানান, ৯৯৯-এ এক যাত্রীর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় আহতদের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী মাস্টার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ যাত্রীরা এসে আমাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রথমে বিষয় সম্পর্কে শুনতে চাই। পরে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, টঙ্গী স্টেশন এলাকাটি দুর্বৃত্তদের দখলে। যে কোনো সময়ই দুর্বৃত্তদের কবলে পড়তে হয় যাত্রী ও সাধারণ মানুষকে। এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এছাড়া ঘটনার পর রাত ২টার দিকে রেল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস বলেন, কমিউটার ট্রেনে চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুঁড়ে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় ৯ সদস্যকে আটক করেছি।
আটক হওয়া সদস্যরা হলেন-গাজীপুর টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার মাসুমের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. হাশেমের ছেলে মেহেদী হাসান জয় (২৬), একই থানার আমতলী টেরানির টেক এলাকার মৃত বাবুল খানের ছেলে মো. রনি (৩৫), নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ঘোড়াশাল গ্রামের মো. নুর আলমের ছেলে রবিউল হাসান (৪০), টঙ্গী পূর্ব থানার মরকুন পশ্চিম পাড়া এলাকার মো. স্বাধীন (৩০), জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার কলাফাতি গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম জাকির (২৫), জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার গলাবাধি গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে মো. মাসুদ (২৭), টঙ্গী পূর্ব থানার নতুন বাজার এলাকার মো. মোতালেবের ছেলে মো.নাসির (২০), গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বলিয়াদী বাজার এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মো.নয়ন হাসান (২৮) ও টঙ্গী ব্যাংকের মাঠ বস্তির মো. আশিক (২২)।
তিনি বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: