কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)–বিষয়ক দূত ও বেলজিয়ামের রানি মাথিল্ডে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তিনি উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে পৌঁছান।
সকালে তিনি ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সড়কপথে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে গিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন প্রত্যক্ষ করেন এবং তাদের গল্প শোনেন। এরপর পাশের মধুরছড়া আশ্রয়শিবির ঘুরে বিকেল চারটায় কক্সবাজার শহরে ফিরে আসেন রানি।
এ সময় রানি মাথিল্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মুহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা প্রথম আলোকে বলেন, বেলজিয়ামের রানির এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গাদের জীবনমান, মানবিক কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বিষয়ে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিকেলে তিনি ঢাকায় ফিরে যান।
রানি মাথিল্ডে মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৪) লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এরপর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দুপুরে লম্বাশিয়া (ক্যাম্প-৫) আশ্রয়শিবিরে গিয়ে তিনি গাছের চারা রোপণ করেন। রানি মাথিল্ডে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার মানবিক কার্যক্রম দেখার পাশাপাশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন প্রত্যক্ষ করেন।
রোহিঙ্গা নারী সনজিদা বেগম বলেন, রানি তাঁদের কথা শুনেছেন। পাশাপাশি মানবসেবায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আশ্রয়শিবিরের স্বাস্থ্যসেবা, ত্রাণ কার্যক্রম ও ক্যাম্পের শান্তিশৃঙ্খলা নিয়েও কথা বলেন রানি।
আশ্রয়শিবির পরিদর্শনকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি রানি মাথিল্ডে। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, রানির এ সফর বাংলাদেশ ও বেলজিয়ামের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ যে সহায়তা করছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেটা আরও জোরালো আলোচনা তৈরি করবে। এটা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সহায়ক হবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে কয়েক দফায় আসে আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। দীর্ঘ পাঁচ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার সরকার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: