যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারির দুই রাজনৈতিক বার্তা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৪ জুলাই ২০২৩ ০৯:২৪

বাংলাদেশ সফরে আজরা জেয়ার : সংগৃহীত ছবি বাংলাদেশ সফরে আজরা জেয়ার : সংগৃহীত ছবি


যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার বাংলাদেশ সফরে কূটনীতি থেকে রাজনীতি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তার সফরে রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে বেশি আগ্রহ ছিল সব মহলে। আপাতদৃষ্টিতে তিনি এই সফরে দুটি রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন– প্রথমটি হচ্ছে ‘শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচন যা তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন। অপর বার্তাটি হচ্ছে, তিনি পুরো সফরে ‘অংশগ্রহণমূলক’ বা ‘অন্তর্ভূক্তিমূলক’ শব্দটি একবারের জন্যও উচ্চারণ করেননি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নির্বাচনে কে অংশগ্রহণ করবে তার চেয়ে সহিংসতামুক্ত নির্বাচনে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়াশিংটন।

এ বিষয়ে একজন সাবেক কূটনীতিক বলেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন যখন বলা হয় তারমধ্যে শান্তিপূর্ণ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে চলে আসে। কিন্তু যখন শান্তিপূর্ণ শব্দটি বলা হচ্ছে তখন বোঝা যায় এর ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ফলে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না করার বিষয়ে ঈঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে বলে মনে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকতো। কিন্তু এবারের সফরে মনে হচ্ছে স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে।’

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে কোনও কথা বলেনি যুক্তরাষ্ট্র। এর মানে হতে পারে যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তারা দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছে বলে মনে করেছেন এই সাবেক কূটনীতিক।

১৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় আজরা জেয়ার। এক ঘণ্টারও বেশি সময় চলা বৈঠকে নির্বাচন, রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মূল আলোচনা হয় দুপুরের দিকে। এছাড়া আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারির।

এ বিষয়ে একটি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার নীতির অংশ হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন এবং এ বিষয়টি সব বৈঠকে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া ১২ জুলাই, বুধবার দুই দলের সহিংসতাবিহীন সমাবেশের বিষয়টিও উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানিয়েছে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় তারা।

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে তার। পরে মন্ত্রী জানান, শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলামের মৃত্যু, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, নির্বাচন আইনসহ অন্যান্য ইস্যুতে দুইপক্ষের আলোচনা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা নিরাপত্তা, বেসামরিক নিরাপত্তা, মানবপাচার সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আন্ডার সেক্রেটারি ১১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ সফর করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত এক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

প্রতিনিধি দলে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিন্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু-সহ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: