11/10/2025 ট্রাম্প বিতর্কের জন্য ক্ষমা চাইবে বিবিসি
মুনা নিউজ ডেস্ক
১০ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০৯
তথ্যচিত্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য সম্পাদনা নিয়ে বিতর্কের জেরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ক্ষমা চাইতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলায় ট্রাম্প তার সমর্থকদের উস্কে দিয়েছেন— এমন একটি বক্তব্য সম্পাদনা নিয়ে বিতর্কের জেরে বিবিসি’র শীর্ষ দু’জন কর্মকর্তা নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করেছেন।
গতকাল রোববার বিবিসি মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বিবিসি নিউজের সিইও ডেবোরাহ টারনেস পদত্যাগ করেন। অভিযোগ রয়েছে, বিবিসি’র প্রধান অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান ‘প্যানোরমা’তে ট্রাম্পের বক্তব্য বিভ্রান্তিকরভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে।
বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ ঘটনাটিকে ‘বিবিসির জন্য দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন। সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কালচার, মিডিয়া ও স্পোর্টস কমিটিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত এই সম্প্রচার সংস্থাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন মতাদর্শিক পক্ষ থেকে পক্ষপাতদুষ্ট কাভারেজের অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে গাজা যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও রয়েছে।
ট্রাম্প দুই কর্মকর্তার পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বিবিসির সাংবাদিকদের ‘দুর্নীতিবাজ’ ও ‘অসৎ’ বলে অভিযুক্ত করেন। তবে, টারনেস তার বিদায়ী বার্তায় বলেন, ‘বিবিসি নিউজ প্রতিষ্ঠানগতভাবে পক্ষপাতদুষ্ট— এমন অভিযোগ সঠিক নয়।’
যুক্তরাজ্য সরকার যখন বিবিসির রয়্যাল চার্টার পর্যালোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন সময় এ ঘটনা ঘটেছে। এই চার্টারে সংস্থাটির পরিচালনা কাঠামো ও জনসেবার লক্ষ্য নির্ধারিত থাকে।
বর্তমান চার্টার ২০২৭ সালে শেষ হবে এবং এর মধ্যে তা নবায়ন করতে হবে। টিম ডেভি আশা করেন, নতুন প্রধান ‘পরবর্তী সংস্করণকে ইতিবাচকভাবে রূপদান করবেন’।
সংস্কৃতিমন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি এর আগেরও পক্ষপাতের অভিযোগকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, চার্টার পর্যালোচনার মাধ্যমে বিবিসি ‘নতুন যুগের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে।’
শীর্ষ দুই কর্মকর্তার পদত্যাগকে কিছু সমালোচক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘সময়োপযোগী জবাবদিহিতা’ হিসেবে দেখছেন। অন্যরা বলছেন, এটি ডানপন্থী সমালোচক ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপের ফল।
এর আগে সাবেক কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বিবিসির লাইসেন্স ফি পরিশোধ বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। আর বর্তমান টোরি পার্টি নেতা কেমি ব্যাডেনোচ দুই কর্মকর্তার পদত্যাগকে ‘গুরুতর ব্যর্থতার ধারাবাহিকতার’ ফল আখ্যায়িত করে স্বাগত জানান।
তবে, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতা ডেভি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে আহ্বান জানান, ট্রাম্প যেন ‘বিবিসির ওপর হস্তক্ষেপ না করেন’।
ডেভি বলেন, ‘ট্রাম্প কেন বিশ্বের এক নম্বর সংবাদ সংস্থাকে ধ্বংস করতে চায়, তা বোঝা সহজ। আমরা তাকে তা করতে দিতে পারি না।’
টিম ডেভির জায়গায় অন্য কেউ দায়িত্ব নিতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। তিনি ‘টেফলন টিম’ নামে পরিচিত ছিলেন। কারণ, তিনি নানা বিতর্ক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারতেন। তবে, সর্বশেষ বিতর্ক থেকে তিনি বেরিয়ে আসতে পারেননি।
গত সপ্তাহে ডেইলি টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিবিসির সম্পাদকীয় মানদণ্ড কমিটির সাবেক উপদেষ্টা মাইকেল প্রেসকটের একটি অভ্যন্তরীণ স্মারকে পক্ষপাত নিয়ে একাধিক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ছিল— ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের ভাষণের বিভিন্ন অংশ একত্র করে তৈরি করা একটি ক্লিপ নিয়ে সমালোচনা, যেখানে তাকে ক্যাপিটলে হামলায় উস্কে দেওয়ার অভিযোগ ছিল।
সম্পাদিত ক্লিপে দেখা যায়, তিনি সমর্থকদের বলছেন, ‘আমরা ক্যাপিটলে যাব এবং ভয়ঙ্করভাবে লড়াই করব।’ কিন্তু অপরিবর্তিত ক্লিপে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট বলছেন, ‘আমরা একসঙ্গে যাব এবং আমাদের সাহসী সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের উৎসাহ দেব।’
এ বছরের শুরুর দিকে বিবিসি ‘গাজা : হাউ টু সারভাইভ এ ওয়ারজোন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণে ‘গুরুতর ত্রুটি’ থাকায় একাধিকবার ক্ষমা চায়।
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ সংক্রান্ত বিবিসির প্রতিবেদন নিয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা সংস্থাটির লন্ডন সদর দপ্তরের সামনেও বিক্ষোভ করেছে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.