11/24/2024 ধাক্কা খেয়ে নতুন পথে বাইডেন
মুনা নিউজ ডেস্ক
২ জুলাই ২০২৩ ১৫:৩৬
সুপ্রিমকোর্টের বাতিল করা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষিত ৪৩০ বিলিয়ন ডলারের শিক্ষাঋণ বাতিলে বিকল্প চিন্তা করছে হোয়াইট হাউজ। গত বছর করোনা মহামারির কারণে ক্ষতির মুখে পড়া শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিলেন জো বাইডেন। এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থী, প্রগতিশীল কর্মী ও আইনপ্রণেতারা।
তবে তার এই প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি জন রবার্টসের লিখিত রায়ে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার বাইডেন প্রশাসনের নেই।’ এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব ঋণগ্রহীতাই বাইডেন প্রশাসনের ঋণ মওকুফ কর্মসূচির সুযোগ নেবে। রয়টার্স।
সুপ্রিমকোর্টের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনকানুন ব্যবহার করেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ঋণের বোঝা কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট বলেন, বিকল্প আইনি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ছাত্রদের ঋণ বাতিল করার পরিকল্পনা করছেন। বাইডেন বলেছিলেন, তার প্রশাসন ১৯৬৫ সালের উচ্চশিক্ষা আইনের মাধ্যমে ছাত্র ঋণ মওকুফে কাজ করবে, যেখানে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ঋণ পরিবর্তন, মওকুফ বা আপস করার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি হোয়াইট হাউজ থেকে দেওয়া মন্তব্যে বলেন, আমার দৃষ্টিতে ঋণগ্রহীতাদের পরিত্রাণ প্রদানের জন্য এখন এটিই সহজ উপায়। এক্ষেত্রে আইনি কোনো জটিলতা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে এটির জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।
প্রেসিডেন্ট আরও জানান, ইতোমধ্যেই তিনি তার প্রশাসনকে যত দ্রুত সম্ভব আইনের অধীনে এসে যা কিছু সম্ভব তাই করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, শিক্ষামন্ত্রী মিগুয়েল কার্ডোনা উচ্চশিক্ষা আইন ১৯৬৫-এর মাধ্যমে নিয়ম তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
কার্ডোনা বলেছেন, ঋণ বাতিলের অনেক উপায় আছে। এর মধ্যে একটি ব্লক করা হয়েছে, বাকিগুলো তো সচল। তিনি বলেন, যেসব ঋণগ্রহীতারা অক্টোবরে শিক্ষাঋণ বিলার বিরতি শেষ হলে অর্থপ্রদান করতে পারবেন না তারা মিস পেমেন্টের সঙ্গে আসা ঋণ সুধ পরিশোধে এক বছর সময় পাবেন। এমনকি ১ অক্টোবর-২০২৩ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর-২০২৪ পর্যন্ত ‘অন-র্যাম্প’ সময়কালে সেই ঋণগুলোতে সুদ জমা হতে শুরু করলে যেসব ঋণগ্রহীতা অর্থপ্রদান করেন না তাদের ব্যাপারে ক্রেডিট এজেন্সিগুলোতে রিপোর্ট করা হবে না।
শিক্ষাঋণের বোঝা কমানো বাইডেনের নির্বাচনি অঙ্গীকারের অংশ ছিল। ১৫ বছরে দেশটিতে শিক্ষাঋণের পরিমাণ প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। ২০০৭ সালে শিক্ষার্থীদের ওপর ঋণের বোঝা ছিল প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে।
শিক্ষাঋণ গ্রহণকারী ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী এর দ্বারা উপকৃত হবে বলে বাইডেন প্রশাসন এ প্রস্তাব করেছিল। তবে রিপাবলিকান পার্টির নেতৃত্ব থাকা নেব্রাস্কা, মিসৌরি, আর্কানসা, আইওয়া, ক্যানসাস ও সাউথ ক্যারোলিনা রাজ্যে শিক্ষাঋণ মওকুফের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযোগে বলা হয়, বাইডেন অতি মাত্রায় ক্ষমতা ব্যবহার করছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই।
সুপ্রিমকোর্ট এসব রাজ্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে ঋন বাতিলের প্রস্তাবটি নাকোচ করে দেয়। যার মাধ্যমে যা গত আগস্টে বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়ার পর থেকে ঋণ বাতিলের জন্য আবেদনকারী ২৬ মিলিয়ন মানুষের আশা ধূলিসাত করে দিয়েছে। ছাত্র ঋণ বাতিলের আন্দোলনের জোট ‘উই দ্য ৪৫ মিলিয়ন’-এর নির্বাহী পরিচালক মেলিসা বাইর্ন বলেন, বাইডেন প্রশাসনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি তাদেরই রক্ষা করতে হবে। এটি আমাদের মর্যাদার লড়াই। ছাত্র ঋণ বাতিল করতে হবে এর কোনো বিকল্প নেই। আমি বিশ্বাস করি, আমার ছাত্র ঋণ বাতিল কর্মসূচি আটকে দেওয়া আদালতের ভুল ছিল, ভয়াবহ ভুল সিদ্ধান্ত ছিল-বলছিলেন প্রেসিডেন্ট।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.