10/19/2025 ক্যারিবিয় সাগরে 'সাবমেরিন' হামলার কথা স্বীকার করলেন ট্রাম্প
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৮ অক্টোবর ২০২৫ ২১:২৭
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে হামলার কথা স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একটি সাবমেরিনে হামলা চালিয়েছি, যা বিশাল পরিমাণ মাদক পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।’
তবে ট্রাম্প কোনো প্রমাণ দেননি যে এটি আসলেই সাবমেরিন ছিল কিনা, বা কী ধরনের পণ্য বহন করছিল। তিনি বলেন, “এরা নির্দোষ মানুষ নয়। আমি খুব কম মানুষকেই চিনি যাদের কাছে সাবমেরিন আছে।”
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার প্রথম এ ঘটনার খবর প্রকাশ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দুইজন জীবিত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাদের অবস্থা বা বিচার হবে কিনা, তা এখনো অনিশ্চিত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় আরও দুইজন নিহত হয়েছে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘আমরা মাদক-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। এরা সন্ত্রাসী, একথা পরিষ্কার থাকা উচিত।’
ট্রাম্প প্রশাসন এখন পর্যন্ত পাঁচটি হামলার কথা স্বীকার করেছে, যাতে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছে।
মাদকবিরোধী যুদ্ধ না রাজনৈতিক সংকেত?
ওয়াশিংটন দাবি করছে, এসব হামলা ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক পাচার ঠেকাতে চালানো হচ্ছে। তবে কোনো নিহত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে তার দেশের নাগরিকও থাকতে পারে। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর একটি পরিবারও দাবি করেছে, তাদের এক আত্মীয় সাম্প্রতিক হামলাগুলোর একটিতে নিহত হয়েছেন।
ভেনেজুয়েলা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপন করে হামলাগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব হামলা মার্কিন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে, কারণ মাদক পাচারকারীরা যোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত নয়।
মাদুরোকে ‘সবকিছু দিতে রাজি’ বলে মন্তব্য ট্রাম্পের
বৈঠকে ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে নানা ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, সে সবকিছু দিতে রাজি। কারণ সে জানে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঝামেলায় যেতে চায় না।”
ট্রাম্প ও মাদুরোর মধ্যে শত্রুতার ইতিহাস দীর্ঘ। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরার পর ট্রাম্প মাদুরো সরকারের সঙ্গে কিছু সীমিত যোগাযোগ শুরু করেছিলেন।
বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেলকে কারাকাসে পাঠানো হয়েছিল আটক মার্কিন নাগরিকদের ফেরত আনতে ও অভিবাসন বিষয়ে আলোচনার জন্য।
তবে এ মাসের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন গ্রেনেলের মিশন বাতিল করে, ফলে কূটনৈতিক সংলাপ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
গত আগস্টে ট্রাম্প মাদুরোর গ্রেপ্তারে ৫০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।
যুদ্ধঘোষণার আশঙ্কা
ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ার পাশাপাশি ট্রাম্প নিজের নির্বাহী ক্ষমতা আরও সম্প্রসারিত করছেন। তিনি দাবি করছেন, যুক্তরাষ্ট্র “সহিংস অভিবাসী ও মাদক চক্রের আগ্রাসনের” মুখে পড়েছে।
এর আড়ালে তিনি ১৭৯৮ সালের ভিনদেশি শত্রু আইন অনুযায়ী যুদ্ধকালীন বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগের পথ খুলেছেন।
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো নিজেই “ট্রেন দে আরাগুয়া” গ্যাংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক ও অপরাধীদের পাঠাচ্ছেন—তবে এর কোনো প্রমাণ দেননি।
জাতীয় গোয়েন্দা কাউন্সিলের (এনআইসি) এক প্রতিবেদনে এসব দাবি ভিত্তিহীন বলা হয়েছে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.