10/14/2025 শাটডাউন অব্যাহত থাকলে যেকোনও তহবিলের অর্থ দিয়ে সৈন্যদের বেতন দেওয়া হবে
মুনা নিউজ ডেস্ক
১২ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৩৩
যুক্তরাষ্ট্রে চলমান শাটডাউনের মধ্যেও সেনা সদস্যদের বেতন প্রদান করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে শনিবার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ অচলাবস্থার অজুহাতে বেসামরিক কর্মীদের ছাঁটাই শুরু করেছে হোয়াইট হাউজ।
নির্ধারিত সময়ে বাজেট অনুমোদন না হওয়ায় পুরোপুরি শাটডাউনে চলে গেছে সরকার। অর্থছাড় না হওয়ার অজুহাতে ইতোমধ্যে বেসামরিক কর্মীদের ছাঁটাই শুরু করলেও নির্ধারিত বেতনসীমায় থাকা সামরিক কর্মীরা যেন বুধবার তাদের পে-চেক থেকে বঞ্ছিত না হন, সে ব্যাপারে যে কোনও পদক্ষেপ নিতে এবং যে কোনও তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে হেগসেথকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ ট্রাম্প লিখেছেন, দেশের সেনাবাহিনী ও জাতীয় নিরাপত্তাকে ডেমোক্র্যাটদের শাটডাউনে জিম্মি হতে দেব না। কট্টর বামপন্থি ডেমোক্র্যাটরা সরকার পুনরায় চালু করুক। তারপর আমরা স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
বাজেট নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ব্যর্থতার দায় নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলই কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছে। স্বাস্থ্যবিমার খরচ কমাতে করছাড় সুবিধা বজায় রাখা এবং মেডিকেইডের জন্য বরাদ্দ হ্রাসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবি নিয়ে দু শিবিরে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। অচলাবস্থা কাটাতে এ বিষয়ে শিগগিরই দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রয়োজন।
রিপাবলিকানদের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা অপ্রয়োজনে সরকারকে অচল করে রেখেছে, যার প্রভাব এখন সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে।
প্রায় সাড়ে সাত লাখ সরকারি কর্মচারী, যা মোট ফেডারেল কর্মীর প্রায় ৪০ শতাংশ, এখন বেতনহীন ছুটি বা বরখাস্ত অবস্থায় আছেন। অন্যদিকে, সেনাবাহিনীর অনেক কর্মীকে ‘অপরিহার্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা বেতন না পেলেও দায়িত্ব পালনে বাধ্য।
আইন অনুযায়ী, অচলাবস্থা শেষে কর্মীরা বকেয়া বেতন পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে বকেয়া বুঝে পাওয়ার নিশ্চয়তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
অচলাবস্থার মধ্যে সামরিক বাহিনীর বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা রাজনৈতিক চাপ কিছুটা কমাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রশাসন আরও কঠোর পথে গিয়ে হাজার হাজার সরকারি কর্মীকে ছাঁটাই শুরু করেছে— যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।
হোয়াইট হাউজের বাজেট কার্যালয়ের পরিচালক রাসেল ভট শুক্রবার এক্সে লিখেছেন, ছাঁটাই শুরু হয়েছে। পরে প্রশাসন জানায়, সাতটি সরকারি সংস্থার চার হাজারের বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এই ছাঁটাইয়ের মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসির ওয়াশিংটন অফিসের কর্মী, যারা ইবোলা প্রতিরোধ, টিকাদান কর্মসূচি ও মৃত্যুহার সংক্রান্ত সাপ্তাহিক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিলেন।
স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু নিক্সন বলেন, ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা ‘অপরিহার্য নন’। ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা হেলদি অ্যাগেইন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অপ্রয়োজনীয় সংস্থাগুলো বন্ধ করছে প্রশাসন।
অর্থ মন্ত্রণালয় এবং সাইবারসিকিউরিটি সংস্থার কর্মীরাও ছাঁটাই হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, সরকারি কর্মচারীদের ইউনিয়ন এএফজিই এবং এএফএল-সিআইও ছাঁটাই বন্ধে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে মামলা করেছে। এএফজিই সভাপতি এভারেট কেলি বলেছেন, সরকার অচলাবস্থাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে হাজার হাজার কর্মীকে বেআইনিভাবে বরখাস্ত করছে, যারা মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিতেন। পুরো বিষয়টি লজ্জাজনক।
হোয়াইট হাউজের বাজেট অফিস জানিয়েছে, ছাঁটাই কেবল শুরু হয়েছে। আদালতে দাখিল করা এক নথিতে বিচার বিভাগ জানিয়েছে, শিক্ষা, বাণিজ্য, আবাসন, জ্বালানি ও পরিবেশ সংস্থা থেকেও আরও কর্মী ছাঁটাই হতে পারে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.